আগামী তিন দশকের মধ্যে বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু পাঁচ বছর বাড়বে। দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণা তথ্য বলছে, গড় আয়ু বাড়লেও এ সময় মোটা হওয়া বা মেদবহুল হওয়ার প্রবণতা এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ বাড়বে। ফলে মানুষকে ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমান জীবনধারার সঙ্গে ভবিষ্যতের জীবনযাপনের অনেকটাই পরিবর্তন হবে। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড অ্যাডিকশনের প্রধান গবেষক ও বৈজ্ঞানিক লিয়ানে ওং জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যে আসক্তি ও মোটা হওয়ার প্রবণতা দুইই বাড়বে।
গবেষকদলের মতে, বিশ্বজুড়ে পুরুষদের গড় আয়ু ৭১ বছর এক মাস থেকে বেড়ে ৭৬ বছর দুই মাস হবে। নারীদের গড় আয়ু ৭৬ বছর দুই মাস থেকে থেকে ৮০ বছর পাঁচ মাস হবে। এখন যেসব দেশে মানুষের গড় আয়ু কম, সেখানে আয়ু সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
গবেষক সংস্থার ডিরেক্টর ক্রিস মারে জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি আয়ের দেশ ও কম আয়ের দেশের মধ্যে বৈষম্য থাকবে, তবে ব্যবধান কমবে। সাব সাহারান-আফ্রিকায় মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
গবেষকরা বলেছেন, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার ফলেই আয়ু বাড়বে। কোভিড-১৯, সংক্রামক রোগ, মাতৃত্বকালীন রোগ, বাচ্চাদের রোগ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা কাটানোর জন্য নেওয়া উদ্যোগের ফলে আগামী তিন দশকে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাবে বলে গবেষকরা মনে করছেন।
গবেষকরা এটাও দেখেছেন, দুই হাজার সাল থেকে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মোটা হওয়ার প্রবণতা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বায়ুদূষণ, ধূমপান, বাচ্চার ওজন কম হওয়ার মতো বিষয়গুলোর প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে। মারে বলেছেন, এই সব প্রবণতা ঠেকানোর একটা বড় সুযোগ আমাদের সামনে আসছে। বিশেষ করে ব্যবহারিক ও জীবনযাপন সংক্রান্ত সমস্যা শুধরে নেওয়া যায়। তাহলে এই সব রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সূত্র: রয়টার্স, ডিপিএ, ডয়চে ভেলে