ই-কমার্স ব্যবসার নামে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর তিনটি তালিকা দিয়েছে তিন গোয়েন্দা সংস্থা। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছে গতকাল সোমবার এই তালিকা দেওয়া হয়েছে। একটি তালিকায় ১৯টি, আরেকটিতে ১৭ এবং অন্যটিতে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। তবে তালিকাগুলোতে কমন নাম (একই নাম) রয়েছে আটটি প্রতিষ্ঠানের। সে হিসেবে প্রতারণায় জড়িত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৩।
গোয়েন্দাদের ফাইলে কোন কোন কম্পানির নাম আছে, তা প্রকাশ করেনি মন্ত্রণালয়। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ই-কমার্স নিয়ে ১৫ সদস্যের কমিটির বৈঠক শেষে এই তথ্য জানান কমিটির সমন্বয়ক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবের খোঁজ নিতে গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তালিকাগুলো ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কাছে দেওয়া হবে।
আগামী ৯ নভেম্বর কমিটির আরেকটি বৈঠক হবে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘সেই মিটিংয়ে এই তালিকার কম্পানিগুলোর আর্থিক লেনদেনের হিসাব উত্থাপন করা হবে। মিটিংয়ে তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উত্থাপন করব।’
যারা ই-কমার্স ব্যবসা করবে, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগির এটা অনলাইনেই করা যাবে। আমরা আশা করছি, ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে নিবন্ধনপ্রক্রিয়া চালু করতে পারব।’
এসক্রো সার্ভিসের আটকে থাকা টাকার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার অনুমোদন পেলে
এসক্রো সার্ভিসে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া শুরু হবে। এটা সিআইডি ফ্রিজ করে রেখেছে। তাদের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই টাকা বিতরণ শুরু করা যাবে। এখানে হয়তো সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ শতাংশ টাকা কাটা হতে পারে। টাকাটা যেহেতু অনলাইনে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এটা অনলাইনেই ফেরত যাবে।
তবে এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ‘টাকা ফেরতের বিষয়টি একটি বড় ইস্যু হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি দেখবে।
নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সত্যিকার অর্থে জুলাই মাস থেকে যাদের টাকা আটকে আছে, সেগুলো যেন তাদের কাছে ফেরত যায়। এ বিষয়ে যেসব আইনি জটিলতা আছে, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ব্যবস্থা নিচ্ছি, একটু সময় লাগবে।
জুলাই থেকে পেমেন্ট দিয়ে যারা বিভিন্ন কারণে ফেরত পায়নি, সেটা ক্লিয়ার করে তারা যেন পায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।’ তিনি জানান, মন্ত্রিসভা থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে তারাও কাজ করছে।