তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই মহড়া শুরু হয়। চীনা সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের কঠোর শাস্তি’ হিসেবে এই যৌথ মহড়া চালানো হচ্ছে। খবর সিনহুয়ার।
সিনহুয়া বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে তাইওয়ান প্রণালি, তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বে মহড়া শুরু করেছে চীনের সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড। পাশাপাশি তাইওয়ানের কিনমেন, মাতসু, উকিয়ু এবং ডঙিন দ্বীপপুঞ্জের চারপাশেও মহড়া চালায় চীন।
চীনের সামরিক মুখপাত্র লি সি বলেছেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার’ নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড চালানোর কঠোর শাস্তি হিসেবে এই মহড়া চালানো হয়েছে। এ ছাড়া বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ ও উসকানির বিরুদ্ধেও কড়া সতর্কবার্তা ছিল এই মহড়া।
গত সোমবার তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে শপথ নেন। এর তিন দিন পর নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করল চীন।
শপথ গ্রহণের পর গত সোমবার জনসাধারণের উদ্দেশে নিজের প্রথম ভাষণে লাই বলেন, ‘তাইওয়ান একটি সার্বভৌম এবং স্বাধীন দেশ যার সার্বভৌমত্ব জনগণের মধ্যে রয়েছে’। একইসঙ্গে তার সরকার তাইওয়ানের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বিষয়ে কোনও ছাড় দেবে না বলেও জোর দেন তিনি।
এসময় তিনি বেইজিংকে ‘তাইওয়ানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করতে’ এবং ‘তাইওয়ান প্রণালী ও এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার’ জন্য আহ্বান জানান।
আর এর পরের দিন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তার এই বক্তব্যের নিন্দা করেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজাখস্তানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ওয়াংকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘লাই চিং-তে এবং অন্যদের কুৎসিত কর্মকাণ্ড যারা জাতি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তা লজ্জাজনক।’
তিনি আরও বলেন, (বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের সঙ্গে) চীনের ‘পুনর্মিলন’ এবং তাইওয়ানকে ‘মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে আনা’ থেকে বেইজিংকে কিছুই আটকাতে পারবে না। ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সকলেই ইতিহাসে লজ্জার স্তম্ভে স্থান পাবে’।
এদিকে বুধবার প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে চীনের রাষ্ট্র-চালিত গ্লোবাল টাইমস ট্যাবলয়েড প্রেসিডেন্ট হিসাবে লাইয়ের প্রথম বক্তৃতাকে ‘অপরাধী আচরণ’ হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং দাবি করেছে, তার এই বক্তৃতা ‘শত্রুতা এবং উস্কানি, মিথ্যা এবং প্রতারণাতে ভরপুর’।
চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যৌথ সমুদ্র-আকাশপথে যুদ্ধ-প্রস্তুতি টহল, মূল লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল হামলা এবং দ্বীপ চেইনের অভ্যন্তরে ও বাইরে সমন্বিত অভিযানের ওপর ফোকাস করা হয়েছে।