ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, আমরা হল, বিভাগ, কেন্দ্রীয় অ্যালামনাইসহ সকলের সহযোগিতায় প্রথম বর্ষের শিক্ষাথীদের বৃত্তির আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করব, যেন প্রথম বর্ষে কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে। পরে সক্ষমতা থাকলে দ্বিতীয় বর্ষকেও বৃত্তির আওতায় আনা হবে। আর্থিক সচ্ছলতা থাকলে বিপদগামী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
তিনি জানান, চলতি বছরের জুলাই থেকে যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে, তাদের ৩ দিনব্যাপী মানসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিভাগগুলোর প্রত্যেক বর্ষের সিআর, শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শ দপ্তরের যৌথ আয়োজনে ‘ওয়েলনেস ফেস্টিভ্যাল’-এ তিনি এসব কথা বলেন। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য বলেন, এ বয়সে শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় না। গ্রাম থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধনহীন হয়ে পড়ে। এখানে তারা নানাভাবে প্রভাবিত হয়। আমরা বলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল আছে, ফুলের কাঁটাও আছে। অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
তিনি বলেন, কেউ কেউ আছে আত্মহত্যার পথে হয়তো যায় না। কিন্তু তাদের পরীক্ষার ফল খারাপ হয়, বছর গ্যাপ হয়, বারবার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য যদি ভালো থাকে, তাহলে তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা থেকে সহজে উত্তরণ করতে পারবে।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেয়। তা থেকে আমরা মাত্র ৬ হাজারের মতো ভর্তি করি। অর্থাৎ, প্রতি ৫০ বা ৫১ জনের মধ্যে একজন ভর্তির সুযোগ পায়। কী ধরনের প্রক্রিয়ায় এখানে শিক্ষার্থীরা আসে, তা সহজেই অনুমেয়। এই শিক্ষার্থীরা যদি পরিপূর্ণ বিকশিত হতে না পারে, তাহলে এর দায় বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্র, প্রাক্তনসহ আমরা-আপনারা কেউ এড়াতে পারব না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোল্লা মোহাম্মাদ আবু কাওছার, টিএসসি ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শ দান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মেহ্জাবীন হক, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম হোসাইন। এতে সভাপ্রধান ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
ঢাকা আহছানিয়া মিশন সাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র সাইকোলজিস্ট এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য রাখী গাঙ্গুলী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।