রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের এলাকাকে বড় ঝাঁকুনি দেওয়ার একদিনের মধ্যেই ফের ঢাকার পাশে ভূমিকম্প অনুভত হয়েছে। এবার সাভারের আশুলিয়া এলাকায় মদৃ ভুমিকম্প অনুভত হয়েছে। আড়াই বছরের মধ্যে এটি ঢাকার পাশে তৃতীয় ভূমিকম্প এবং ১২ বছরের মধ্যে ১০টি ভূমিকম্প। এর আগে কয়েক যুগ ধরে এমনটি দেখা যায়নি।
আজ শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডের এই কম্পন রেকর্ড করা হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল তিন দশমিক তিন।
ভূমিকম্প হলেই রাজধানী ঢাকা নিয়ে সবার মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। কারণ অপরিকল্পিত এই নগরে বড় ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি হবে অকল্পনীয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল বদলে গেছে। আগে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে বেশি ছিল। এখন মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, দোহার ও নরসিংদীর দিকে সরে এসেছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, এখানকার ভূগর্ভে বার্মা প্লেটের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেট চাপা পড়ে শক্তি জমছে, যা কখন মুক্তি পাবে, তা কেউ জানে না। তবে হিসাব বলছে, ঝুঁকির দিকটা সামনের দিকে আরও বাড়ছে; কমছে না।
এর মধেই গতকাল শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নরসিংদীর মাধবদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গাজীপুর ও সাভারের মাঝামাঝি আশুলিয়ায় বাইপাইল এলাকায় শনিবার অনুভূত হয়। এর আগে ২০২৩ সালের ৫ মে ঢাকার দোহার উপজেলায় উৎপত্তি হওয়া মৃদু ভূমিকম্পে নড়ে উঠে ঢাকা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবায়েত কবীর বলেন, সাভারের বাইপাইল ছিল এবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। এটি ছিল অল্পমাত্রার ভূমিকম্প; রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৩ মাত্রার।
কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পেশাগত সহকারী নিজাম উদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন, এটি ’মাইনর ভূমিকম্প’ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল গাজীপুরের বাইপাইল। যদিও কম্পনটি ছোট। ভূমিকম্পটি স্বল্পমাত্রার হলেও স্থানীয়ভাবে অনেকে টের পেয়েছেন।
আগের দিন শুক্রবার সকালে রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার পূর্বে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মধ্যাঞ্চল। ভয়াবহ সেই ঝাঁকুনিতে দুই শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় চারজন, নরসিংদীতে পাঁচজন এবং নারায়ণগঞ্জে একজন প্রাণ হারান। দেশের বিভিন্ন জেলায় আহত হয়েছেন ৬ শতাধিক মানুষ।