ঈদুল আজহার ছুটি প্রায় শেষের পথে। রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। ফলে ঢাকা অভিমুখে ট্রেন ও বাসে যাত্রীচাপ বেড়েছে। তবে চিত্রটা এখনও পুরোপুরি ঢাকামুখী নয়-অনেকেই এখনও ছুটছেন গ্রামের বাড়ির পথে, বিশেষ করে যারা ঈদের সময় ছুটি পাননি বা কাজের ব্যস্ততায় তখন বাড়ি যেতে পারেননি।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলী বাস টার্মিনাল এবং আমিনবাজার সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকায় প্রবেশ এবং ঢাকা ছাড়ার-দুদিকেই মানুষের যাত্রা চলছে। ঈদের ছুটি শুরুর সময় বাড়িমুখী একমুখী ভিড় থাকলেও এখন তা দুইমুখী। যদিও ঢাকামুখী যাত্রীদের সংখ্যাই বেশি।
কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা গেছে, ঢাকায় ফিরতি প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রী ছিল ঠাঁসা। ফিরতি যাত্রীদের অধিকাংশই বেসরকারি চাকরিজীবী। কেউ ছুটি শেষে কাজে ফিরছেন, কেউ আবার ঈদের সময় দায়িত্বে থাকায় ছুটি পাননি-তারা এখন পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের পথে রওনা হয়েছেন।
ট্রেনের এক যাত্রী শাহরিয়ার ইকবাল বলেন, ঈদে ছুটি মেলেনি, এখন ছুটি পেয়েছি তাই বাড়ি যাচ্ছি।
আরেক যাত্রী সায়েম আহমেদ বলেন, ঈদের সময় ঢাকায় কোরবানি আর অফিস নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, এখন একটু ফাঁকা সময় পেয়ে বাড়ি যাচ্ছি।
বাস টার্মিনালেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। গাবতলী বাস টার্মিনালে সকালে যাত্রীচাপ তুলনামূলক কম থাকলেও বিকেল ও সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে তা বাড়তে শুরু করে। হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী এন. আর. ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি কিছুটা লক্ষ্য করা গেছে। তবে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বেশিরভাগ বাসেই যাত্রীসংখ্যা ছিল অর্ধেকের কম-বেশি।
গাবতলীতে কথা হয় বাস যাত্রী সগির আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের সময় মালিক ছুটি দেননি, বাসা পাহারা দিতে হয়েছিল। এখন ভাড়াটিয়ারা ফিরেছেন, তাই আমি পরিবারের কাছে যাচ্ছি।
দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফেরা হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসের চালক বলেন, গত দুই-একদিন ধরে আসা-যাওয়া উভয়পথেই যাত্রী মোটামুটি ভালো হচ্ছে।
ওই বাসের যাত্রী পাভেল বলেন, আসার সময় কোনও যানজটে পড়তে হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা ফাঁকা ছিল, দূরের পথ হলেও দ্রুত আসা গেছে। আমাদের বাস ভর্তি যাত্রী ছিল।
ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা মোটামুটি স্বস্তিতে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন। কেউ কেউ অবশ্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আরও কিছুদিন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কাটাতে পারলে ভালো লাগত, কিন্তু কাজের তাগিদেই ফিরতে হচ্ছে।
রাশেদ জামান নামে এক যাত্রী বলেন, আনন্দে ঈদ কেটেছে, তবে কাজ শুরু হয়ে গেছে, তাই ঢাকায় ফিরলাম।
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি আগামীকাল ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত থাকায় এখন পর্যন্ত ঢাকামুখী যাত্রা ছিল তুলনামূলক স্বস্তিকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ। অনেকেই আগেভাগেই-ঈদের দু-তিন দিন পর থেকেই-রাজধানীতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। আগামী ১৫ জুন (রোববার) থেকে অফিস-আদালতসহ সব সরকারি-বেসরকারি কর্মস্থলে নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হবে।