ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে অনিশ্চয়তা!

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর বারবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি আসছে। শুরু থেকেই বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারকে চাপ দিয়ে আসছে। এ নিয়ে সরকারের কাছে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবি করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে তারিখ ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দুটি সময়সীমার কথা জানানো হয়েছে। তার একটি আগামী ডিসেম্বরে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে ইসি কতটা প্রস্তুত? এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

অবশ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. কে. এম নাসির উদ্দিন দাবি করেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তারা পুরোপুরিই প্রস্তুত।

কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ভোট আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনকে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ ও নির্বাচনি আইনগুলোও সংস্কার করতে হবে। কিন্তু সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব চূড়ান্ত না হওয়ায় সীমানা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কিংবা নির্বাচনি আইন ও বিধানগুলো পরিবর্তনের কাজ শুরু করতে পারছে না ইসি। যে কারণে ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন আয়োজন করতেও এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।

তবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগের আইনকে সামনে রেখেই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সেরে রাখছেন। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে অনেক প্রস্তুতির দরকার। নতুন নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে এখনই ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করার কাজগুলো এগিয়ে রেখেছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের মুখে পড়ে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। যে কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কমুক্ত রাখতে অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের কাছে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, আগের আইন ধরে প্রস্তুতি নেয়ার পর যদি সংস্কারের মাধ্যমে আইন ও বিধান নতুন করে ঢেলে সাজানো হয় তাহলে অনেক কিছুই নতুন করে শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে তাদের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।

এদিকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করার বিষয়ও ভাবছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘যদি ডিসেম্বরকে সামনে রাখি তাহলে আমাদের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা এগোচ্ছি।’

কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আগামী নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু করলেও কিছু কিছু বিষয়ে এখনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।

 

Comments (0)
Add Comment