দেশের প্রচলিত লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বাংলাদেশের বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১.৭ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব, যা মোট ডিজিপিতে প্রায় ৫০ হাজার ৫৮ কোটি টাকা (৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) যোগ করতে পারে। জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন জোট ‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স’ এবং এর সদস্য বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ফ্ল্যাগশিপ প্রগ্রাম এটুআই পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার অনলাইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘মেজারিং প্রগ্রেস টু স্কেল রেসপনসিভ ডিজিটাল পেমেন্টস ইন বাংলাদেশ’ এবং ‘ন্যাশনাল ডিজিটাল পেমেন্টস রোডম্যাপ ২০২২’ শীর্ষক দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সেরা ২৫ অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতির পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চাই এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে চাই। সে ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরা একটি ক্যাশ-লেস সোসাইটি গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে দারিদ্র্য দূর করে সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের অর্থের জোগান বাড়ানোর মাধ্যমে তাদেরও ক্যাশ-লেস সোসাইটির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ’
এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম উন্নয়ন এবং এর সম্ভাবনাময় সুবিধা পেতে এর ওপর নির্ভর অবকাঠামোগত উন্নয়নও সমানভাবে বাড়াতে হবে। আমরা একটি নির্ভরযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার ওপর ভিত্তি করে ডিজিটাল পেমেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। ’
বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্সের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্যামেলিও তেলেজ বলেন, বাংলাদেশ সাত বছর আগে বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল লেনদেন গত পাঁচ বছরে প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যার ফলে ডিজিটালভাবে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, মজুরি এবং প্রণোদনা প্যাকেজ নাগরিক ও শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিডিপির ৫৩ শতাংশ আসবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে মাইক্রো-মার্চেন্ট লেনদেন থেকে, ৪৫ শতাংশ কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ ডিজিটাইজের মাধ্যমে এবং অবশিষ্টাংশ আসবে তৈরি পোশাকের (আরএমজি) অনানুষ্ঠানিক খাতে ডিজিটাল মজুরি প্রদানের মাধ্যমে।