ট্রাভেল খাতে ভূমিকা রাখবে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি
প্রযুক্তি উন্নয়ন বৈশ্বিক প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনলাইনে ভ্রমণ চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ট্রাভেল মার্কেটে এক বড় ধরণের পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। তবে নতুন এই ধারার সঠিক এবং সুস্থ বিকাশের জন্য সরকারের তরফ থেকে পলিসি সাপোর্ট এবং কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত “ভ্রমণ ও প্রযুক্তি: বাংলাদেশে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির উত্থান” শীর্ষক এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তারা এসব মত প্রকাশ করেন।
এভিয়েশন এবং ভ্রমণ বিষয়ক প্রকাশনা দা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত এই সেমিনারে সহায়তা প্রদান করে সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইনোগ্লোব, জিডিএস কোম্পানি স্যাবার, অ্যামাডিয়াস, গ্যালিলিও, ২৪ টিকিট, শেয়ার ট্রিপ, ফ্লাইট এক্সপার্ট, ট্রায়োটেল, অ্যামি।
দু’টি সেশনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান, এসোসিয়েশন অফ ট্রাভেল এজেন্টস অফ বাংলাদেশের (আটাব) প্রেসিডেন্ট মনসুর আহমেদ কালাম, হজ্জ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (হাব) প্রেসিডেন্ট এম. শাহাদাত হোসেন তাসলিম, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) প্রেসিডেন্ট আলমাস কবীর প্রমুখ।
সেমিনারে দু’টি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়- বাংলাদেশে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির (ওটিএ) উত্থান শীর্ষক মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মনিটর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম, ভ্রমণ ও প্রযুক্তি শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী টিনা জাবিন।
ওয়াহিদুল আলম তার বক্তব্যে জানান যে, বাংলাদেশে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির আবির্ভাব ২০১৭ সালে হলেও বর্তমানে ৫০টির অধিক এ জাতীয় এজেন্সি সক্রিয় রয়েছে। ২০১৯ সালের এক ভবিষ্যৎ বানী অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ এই এজেন্সিগুলোর মার্কেট শেয়ার দাঁড়াবে প্রায় ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত। বর্তমানে অনলাইন এই ট্রাভেল এজেন্সিগুলো শুধুমাত্র টিকিট বুকিং সেবাই দিচ্ছে না, পাশাপাশি তাদের অন্যান্য সেবাও রয়েছে যেমন হোটেল বুকিং, ভিসা প্রসেসিং ইত্যাদি।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৪৫ লাখ জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশই বর্তমানে ইন্টারনেট সেবার আওতায় এসেছে। দেশের ই-কমার্স মার্কেটের পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার, দেশে প্রতি মাসে ব্যাংক ট্রান্সফারের সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ, দৈনিক কার্ড ট্রানজেকশনের সংখ্যা ৬ লাখ ৮৫ হাজার, দৈনিক অনলাইন অর্ডারের সংখ্যা ৪০ হাজার, বাৎসরিক ডিজিটাল পেমেন্টের পরিমাণ ৯৭.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, প্রতিদিন মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেনের সংখ্যা ৯৫ লাখ এবং এর পরিমাণ ১৭৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওয়াহিদুল আলমের মতে এমন একটি অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির বিকাশ দ্রুত গতিতেই ঘটবে।
সেমিনারে দু’টি প্যানেল ডিসকাশনেরও আয়োজন করা হয়, যাতে আলোচক হিসেবে এয়ারলাইন, জিডিএস কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।