যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি বলেছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে করোনাভাইরাসের নিরাপদ ও কার্যকর টিকার প্রথম ডোজ ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরু থেকে পাবেন। বৃহস্পতিবার তিনি এ মন্তব্য করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টুইটার ও ফেসবুকে লাইভ চ্যাটে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক বলেছেন, করোনার টিকা তৈরিতে সামনের সারিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজার ইনকরপোরেশনের বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বরের কোনো এক সময়ে মার্কিনিরা টিকা নিরাপদ ও কার্যকর কিনা তা জেনে যাবেন।
ফাউসি বলেন, প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন ফলাফল আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়ার আশা করছি।
গত জুলাই মাসে মডার্না ও ফাইজার তাদের চূড়ান্ত ধাপের টিকা পরীক্ষা শুরু করে। এ দুটি পরীক্ষায় হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মডার্না বলেছে, আগামী মাসে তাদের বড় ও বৃহৎ আকারের টিকা পরীক্ষা তথ্য দেওয়া সম্ভব হতে পারে।
ফাইজার অক্টোবর মাসেই তাদের তথ্য জানানোর কথা বলেছিল। তবে তারা ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের পরে কোনো এক সময় টিকা পরীক্ষার ফল জানাতে পারে।
টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ফলাফল জানানোর পর তা মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশনের পক্ষ থেকে পর্যালোচনা করা হবে। টিকা পরীক্ষা সফল হলে কে প্রথম ডোজ টিকা পাবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেবে সংস্থা দুটি।
ফাউসি বলেছেন, বিশেষভাবে বলতে গেলে করোনার প্রথম ডোজের টিকাগুলো উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে দেওয়ার আশা করা যায়।
ফাউসি এসব মন্তব্য মূলত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের পরিচালক ফ্রান্সিস কলিন্সের সঙ্গে কথোপকথনের সময় করেন।
কবে থেকে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে? এ প্রসঙ্গে ফাউসি বলেছেন, ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশা করা যাচ্ছে না। এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকা তৈরিতে সামনের সারিতে থাকা দুই প্রতিষ্ঠান মডার্না ও ফাইজার কয়েক সপ্তাহ বাদেই তাদের টিকার ফলাফল পাওয়ার আশা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ডিসেম্বরের মধ্যেই করোনার টিকা পাওয়ার আশা বেড়েছে।
মডার্না ও ফাইজারের টিকা ছাড়াও অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাটি নিয়েও আশার কথা শোনা যাচ্ছে। এ টিকাটি বয়স্ক ও তরুণদের মধ্যে প্রতিরোধী সক্ষমতা দেখিয়েছে বলে অ্যাস্ট্রোজেনেকার গবেষকেরা দাবি করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্দান্ত গতিতে টিকা তৈরির কাজ এগিয়ে চলেছে। যেখানে টিকা তৈরিতে ১০ থেকে ১৫ বছর লেগে যায় সেখানে দ্রুত টিকা বাজারে পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। তবে যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্স সংশয় প্রকাশ করে বলেছে, প্রথম প্রজন্মের টিকা সবার জন্য সমান কার্যকর নাও হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের এখন ১৫০টির বেশি টিকা উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ১১ টি টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।