যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তরফ থেকে “মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড”-এ ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী নারী শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ঘোষণা করা হয়। আগামী ১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীরা নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে অসাধারণ সাহস ও নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও উদ্ভাবনী উপায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। পুরুষ সহযোদ্ধাদের গ্রেপ্তারের পরও নারীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সংগঠিত করতে সক্ষম হন, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নারী শিক্ষার্থীদের এই অর্জনে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “নারীদের এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাসে একটি মাইলফলক।”
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ফেসবুকে এক পোস্টে এই পুরস্কার ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর মতে, “ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যাকে সমর্থনকারী যুক্তরাষ্ট্রের এই পুরস্কার ফিলিস্তিনি জনগণের সংগ্রামকে অস্বীকার করে। ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের নামে এই পুরস্কার গ্রহণ করা যায় না।”
মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড চালু হয় ২০২৩ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেডেলিন অলব্রাইটের নামে। এর আগে ইরানের নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। এছাড়া, ২০০৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (আইডব্লিউওসি) পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এবার এই পুরস্কার পেয়েছেন বুরকিনা ফাসো, ইসরায়েল, ফিলিপাইনসহ ৮ দেশের নেত্রীরা।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বাংলাদেশকে “২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ” নির্বাচিত করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন এবং গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে এই স্বীকৃতির মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।