জুমাবার হলো সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। পবিত্র কুরআনে জুমা নামে একটি সুরাও রয়েছে। যেখানে মহান এই দিনের তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচাকেনা বর্জন করো। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
এজন্য জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করে মিসওয়াক, সুগন্ধি ব্যবহারসহ উত্তম কাপড় পরিধান করে মসজিদে যাওয়ার কথা অনেক হাদিসে এসেছে। সালমান ফারসী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, এরপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত (নামাজ) আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৬৪)
অন্যদিকে বিনা কারণে জুমা ত্যাগ করাতেও কঠোর নিষেধ রয়েছে। আবুল জা’দ আয্-যামরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অবহেলা করে তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তার হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেন। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫০০)
জুমার দিনে মসজিদে প্রবেশের পর ২ রাকাত সুন্নত পড়তে হয় যা ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ বা ‘দুখুলুল মসজিদ’ নামে পরিচিত। এটি ওয়াজিব না হলেও হাদিসে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, এমন মুহূর্তে অনেককেই তড়িঘড়ি করে মসজিদে প্রবেশ করেন। ওই সময় তিনি কি খুতবা শুনবেন, নাকি ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করবেন, এ নিয়ে দ্বিধায় পড়েন। আবার অনেককে খুতবা চলাকালেও তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামাজ পড়তে দেখা যায়। কেউ কেউ তো এই সময়ে নামাজ পড়তেও নিষেধ করেন। এমনটা করা কি শরিয়তসম্মত?
যাহোক, সালাত শেষে আমরা তার কাছে এলাম, বললাম- আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন। এরা তো আপনাকে প্রায় হামলাই করে বসেছিল। তিনি (আবু সাঈদ আল-খুদরী রা.) বললেন, এই বিষয়ে রাসুল (সা.) এর আচরণ দেখার পর আমি তো কখনো তা (তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামাজ) ছাড়তে পারি না।
পরে ঘটনা উল্লেখ করে আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) বলেন, একবার জনৈক ব্যক্তি দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় মসজিদে এসে প্রবেশ করলো। ওই সময় রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তিকে তখন দু’রাকাত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ) আদায় করতে আদেশ দিলেন। এরপর তিনি দু’রাকাত আদায় করলেন আর তখন রাসুল (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। (সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১১১৩; সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫১১)