জামায়াতের বিচার করতে আইন সংশোধন: আইনমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আইনমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, ‘(দল হিসেবে) জামায়াতের বিচার করার জন্য আইনের পরিবর্তন দরকার হবে। এটি আমি অনেক আগেই বলেছি। এই আইনের পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছে। আমরা কিছুদিনের মধ্যেই এই আইন পাস করব। তার পরই বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।’

মন্ত্রী বলেন, সরকার মানবতাবিরোধী এবং একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই বিচার করে দেখিয়েছে। অনেক রায় কার্যকর হয়েছে।

জামায়াত নিয়ে আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলা শুনানির জন্য রাষ্ট্র উদ্যোগ নেবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই নেবে। ’

ভিন্ন নামে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের আবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “পত্রপত্রিকায় দেখেছি এবং শুনেছি, জামায়াত অন্য নামে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। আমি দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশন কিভাবে ‘হ্যান্ডেল’ করে এবং তারপর এ বিষয়ে বক্তব্য দেব।”
সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে একটি দল গত বুধবার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। প্রচার রয়েছে, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতারাই দলের কম পরিচিত নেতাদের দিয়ে বিডিপি গঠন করেছেন।

খালেদা জিয়ার শর্তযুক্ত মুক্তি বদলানোর ইচ্ছা নেই : নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় না খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে শর্তযুক্ত রেখে যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তার পরিবর্তন আনার কোনো চিন্তাভাবনা সরকার করছে। ’

খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুই শর্ত বহাল রেখে তাঁর মুক্তির মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো মুক্তির মেয়াদ বাড়াল সরকার। পঞ্চম দফায় তাঁর মুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর।

সর্বোত্তম সেবা দিতে সাবরেজিস্ট্রারদের প্রতি আহ্বান : জনগণকে কোনো ধরনের হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম সেবা দিতে সাবরেজিস্ট্রারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। গতকাল বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাবরেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান। নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরির্শক শহীদুল আলম ঝিনুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তৃতা করেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রযাত্রায় রেজিস্ট্রেশন বিভাগকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এ বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সেবাপ্রার্থী জনগণকে দ্রুত প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের চিন্তা-চেতনা ও মন-মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।

Comments (0)
Add Comment