জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অফিস অব মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স (ওএমএ), ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশন (ডিপিও), নিউইয়র্কে চিফ অব স্টাফ হিসেবে মনোনীত হলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতে তিনি জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি কন্টিনজেন্ট প্রেরণ এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বিভিন্ন উচ্চতর ও গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে আরও কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যাপারে অনুরোধ করেছিলেন। জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেন। তারই ফলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ এই পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদবির একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এই পদের জন্য এর আগে বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মকর্তা নিযুক্ত হননি।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অন্যতম মুখ্য ভূমিকায় এই নিয়োগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সম্মানের বিষয় বলে উল্লেখ করা হয় আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মনোনীত প্রার্থীদের মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই পদের জন্য যোগ্য সামরিক কর্মকর্তা নির্বাচন করা হয়। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল প্রথম বাংলাদেশি সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এমন উচ্চতর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে নিয়োগ পাচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সেনাপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরপরই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মালিতে (মিনুসমা) সেক্টর কমান্ডার পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদবির একজন কর্মকর্তা (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঞ্জুর) নিয়োগ পান। এ ছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মিলিটারি অ্যাডভাইজার এবং চিফ অব স্টাফ পদে নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়। পাশাপাশি জাতিসংঘে মিলিটারি অবজারভার এবং স্টাফ অফিসার হিসেবে ২০টি অতিরিক্ত নিয়োগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
আইএসপিআর জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশ শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে ৯টি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশের ১৫টি কন্টিনজেন্টকে ইউনাইটেড নেশনস পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের (ইউএনপিসিআরএস) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নতুন কন্টিনজেন্টগুলো মোতায়েনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল কর্তৃক এই কন্টিনজেন্টগুলোর মূল্যায়ন এবং অ্যাডভাইজারি পরিদর্শন কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। ইতিমধ্যে দুটি কন্টিনজেন্ট ইউএনপিসিআরএস, র্যাপিডলি ডেপ্লয়েবল লেভেল (আরডিএল) হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত থেকেই ২৫ শতাংশ রক্ষণাবেক্ষণ রিইমবার্সমেন্ট গ্রহণ করছে।