মো.ইউসুফ আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক,কেরাণীগঞ্জ- বঙ্গমাতার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, দিনভর কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং রাতে কেক কাটাসহ নানা আয়োজনে বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মদিন পালন করেছেন বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট। দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট ৮ আগষ্ট রবিবার বনানী কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন। বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ শাহ আলমের নেতৃত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শ্যামল কান্তি নাগ,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাজিব,অর্থ সম্পাদক আরেফিন হক আলভী,সহ-অর্থ সম্পাদক রাজিয়া বেগম,সহ-মহিলা সম্পাদক রীনা বেগম প্রমুখ।
এছাড়া রাতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জস্থ গোলাম বাজার এলাকায় বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে কেক কেটে পালন করা হয় বঙ্গ মাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্ম বার্ষিকী। বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট ঢাকা জেলার সভাপতি মোঃ সজিব আহাম্মেদ রনির নেতৃত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ শাহ আলম। অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট ঢাকা জেলার সাধারন সম্পাদক মো.রাকিবুল হাসান,দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার সভাপতি ইভা আক্তার,সিনিয়র সহ-সভাপতি মো.আল আমীন,সাধারন সম্পাদক নীলা আক্তার,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখি আক্তার,মডেল থানার সভাপতি মো.চানমিয়া, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো.কাঞ্চন প্রমুখ।
এ সময় বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি শেখ শাহ আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াই ও সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। এ লড়াই-সংগ্রাম আর আন্দোলনের নেপথ্যে প্রেরণাদাত্রী ছিলেন ফজিলাতুননেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর গোটা রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি কাজে প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবনযাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফজিলাতুননেছা মুজিবের কাছে ছুটে যেতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাতেন।
তিনি আরো বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রি স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছায়ার মতো অনুসরণ করা বেগম মুজিব জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন, এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে। কাজেই এ দেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কাজেই এই মমতাময়ী মহীয়সী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলা তুন্নেছা মুজিবের আদর্শ আমাদের সবার মাঝে ধারণ করতে হবে। বঙ্গমাতার কর্মকান্ড আমরা অনুসরণ করব এবং আমরা তার আদর্শ ধারণ করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাব এই হোক আমাদেও আজকের প্রত্যয়।
উল্লেখ্য- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরণ করেন।