নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বে চীনের ‘প্রভাবে’ ভারত-নেপাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের তিক্ততা বৃদ্ধি নিয়ে মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই। তিনি বলেন, নেপাল এখন রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে বেরিয়ে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে কাঠমান্ডুকে। কূটনৈতিক টানাপোড়েন কাটিয়ে ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় নেপাল। যে জন্য দু’পক্ষ আলোচনায় বসে দ্রুত সমস্যার সমাধান জরুরি। তার ভাষায়, ‘‘যা হয়েছে, তা ঠিক নয়। দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। কিভাবে তা তৃতীয় কোন পক্ষের (চীন) জন্য ধাক্কা খেতে পারে? দিল্লীর অনেকে মনে করেন, নেপাল চিনের প্রতি ঝুঁকে। যে ধারণা ঠিক নয়। ঐতিহাসিকভাবে আমরা কিন্তু ভারত-ঘনিষ্ঠ। চীনও আমাদের বন্ধু, কিন্তু ওদের সঙ্গে আমাদের আদানপ্রদান অনেক কম।’’
চিকিৎসার জন্য বাবুরাম ভট্টরাই এখন ভারতে অবস্থান করছেন। খবর এনডিটিভির।
সমাজতন্ত্রী রাজনীতিবিদ বাবুরাম ২০১১ সালের আগস্ট থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
ভারতীয় অঞ্চলের ‘দখল’ নিয়ে নেপালের নতুন মানচিত্র সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হতেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জটিলতা চরমে উঠেছিল। ঠিক সেই সময়ে লাদাখ নিয়ে সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা চরমে ওঠে ভারত-চীনের মধ্যেও। সেই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির ওই আচরণের পিছনে চীনের হাত রয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই। তাদের মত, নেপালকে ব্যবহার করে চীন ভারতের উপর চাপ তৈরি করেছে। নেপালে যেভাবে চীনা আগ্রাসন বেড়েছে, তা নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি)-র মদত ছাড়া সম্ভব নয়।
এদিকে, এনসিপি-র অন্দরে বিরোধের জেরে ডিসেম্বরে সংসদের নিম্নকক্ষ ভেঙে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের সুপারিশ করেছিলেন ওলি। গত মাসেই সেই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলে নিম্নকক্ষ ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রসঙ্গে ভট্টরাই বলেন, ‘‘এ সব হচ্ছে কারণ, নেপালে গণতন্ত্র এসেছে অনেক পরে। যে কারণে বিপ্লব ও পাল্টা-বিপ্লব চলছেই। এ ভাবেই গণতন্ত্রের বিকাশ হয়। নেপালে স্থায়িত্ব ও আর্থিক উন্নয়ন ফেরাতে এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক নিশ্চিত করতে সব দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে হবে। সেটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’’