করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ৭৩টি দেশ ও অঞ্চলে। ভয়ংকর এ ভাইরাস এখন চীনের বাইরেই দ্রুতগতিতে অনেক বেশি ছড়াচ্ছে। অনেক দেশে বাসিন্দারা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। জরুরি প্রয়োজনেও দেশের বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। অথচ ঝুঁকির কথা জেনেও নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরে গিয়ে আক্রান্তদের সেবা করতে চান বাংলাদেশি চিকিৎসক সাইয়েদা জেরিন ইমাম।
সম্প্রতি ঢাকায় চীন দূতাবাসে গিয়ে তিনি লিখিতভাবে এই আগ্রহের কথা চীনা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। চীনা দূতাবাস মঙ্গলবার তাদের ফেসবুক পেইজে এ তথ্য জানায়। জেরিন ও তার চিঠির ছবি প্রকাশ করা হয় ফেসবুক পেইজে।
জেরিন চীনের জিনান প্রদেশের শ্যানডং বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএচইডিতে অধ্যয়নরত থাকলেও এখন অবস্থান করছেন বাংলাদেশে।
চীনা বন্ধুদের উদ্দেশে জেরিন লিখেছেন, ‘এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমি শুধু এটাই বলতে চাই, কোনো কারণেই তোমরা একা নও। আমিও রয়েছি তোমাদের পাশে। আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ, হয়ত খুব শক্তিশালীও নই। কিন্তু আমার সাহস আছে, আর আছে হৃদয়। তোমাদের বাঁচানোর জন্য এর সবকিছুই আমি দিতে পারি।’
চীনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাকে উহানে যেতে সহায়তা করুন। সেখানে বিপদে থাকা মানুষদের সহায়তা করার সুযোগ করে দিন।’
ডেন্টালে ডিগ্রি নেওয়ার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্যে স্নাতোকোত্তর করেন ডা. সাইয়েদা জেরিন ইমাম। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেমেও কাজ করেছেন তিনি। স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণাও করেছেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। তবে প্রাদুর্ভাবটি এখন কেন্দ্র পরিবর্তন করে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালি।
করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০১ জনে। বুধবার পর্যন্ত শুধু চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৯৮১ জন। সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৮০১ জন। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও চীনের বাইরে বাড়ছে করোনা রোগী।
চীন ছাড়া আরও ১০টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ৬৭টি দেশের মানুষ।
চীনের বাইরে করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে ৭৯ জন। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ২৬৩ জন। তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ইরানে ৭৭ জনের, আর আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৩৬ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩২ জন, জাপানে ১২ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ৯ জন এবং হংকং ও ফ্রান্সে ২ জন করে মোট ৪ জন মারা গেছেন।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইন, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া ও থাইল্যান্ডে একজন করে করোনায় মারা গেছেন।