চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, উত্ত্যক্তের অভিযোগ

‘আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছুই করিনি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য আর ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ শান্তি চলে গেছে।’ আত্মহত্যার আগে এমন চিরকুট লিখে গেছে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১৬)। লেখা শেষ না করেই ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে।

ছাত্রীর স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করতেন এক তরুণ। বিষয়টি তরুণের পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায় ছাত্রীর পরিবার। তবে কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তরুণ। গতকাল ওই ছাত্রীর সঙ্গে আরেক সহপাঠীর তোলা ছবির সঙ্গে আজেবাজে ক্যাপশন লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন তরুণ। বিষয়টি জানার পর চিরকুট লিখে নিজ কক্ষের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী।

ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, তার মেয়ে অত্যন্ত ভদ্র ও লাজুক। তাকে বিভিন্ন সময় ছেলেটি কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই বখাটের পরিবারকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গতকাল তার মেয়ের সঙ্গে তার এক সহপাঠির তোলা স্বাভাবিক ছবিতে বাজে মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় ওই বখাটে। এতে লোকলজ্জার ভয়ে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি এই হত্যার বিচার চান।

ছাত্রীর বাবা বলেন, আত্মহত্যার আগে তার মেয়ে চিরকুট লিখে গেছেন। চিরকুটে আত্মহত্যার জন্য ওই ছেলেকে দায়ী করে গেছেন। তার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি ওই বখাটের ফাঁসি চান।

বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে এলেও তাঁকে জানানো হয় ঘটনার এক দিন আগে। জানার পরে তিনি ওই ছেলে ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে ডেকে এনে সাবধান করে দিয়েছিলেন।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত তরুণ ও তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে আছেন। বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Comments (0)
Add Comment