‘চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তান নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাব’

ফের শাহবাগ অবরোধ করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন শিক্ষককে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।

এদের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে আসা রাশেদা বেগম বলেন, ‘এ সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাবো।’

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার পর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। তারপর পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান নিক্ষেপ করেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে তাদের ঘিরে রাখা হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, আমরা মেধা দিয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। পুলিশ ভেরিফাই করেই আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেন আন্দোলন করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। আমরা সাত দিন ধরে একটি যৌক্তিক দাবির জন্য আন্দোলন করছি। কোনো উপদেষ্টা কথা বলছেন না। আমরা কী এই দেশের নাগরিক না? আমরা তো ছাত্রদের পাশে ছিলাম। এখন কেন আমাদের পাশে ছাত্র প্রতিনিধি নেই কেন?

ঘটনাস্থলে কাফনের কাপড় পরিহিত চট্টগ্রাম থেকে আসা রাশেদা বেগমকে দেখা যায় তার দুই শিশু সন্তানকে পাশে নিয়ে স্লোগান দিতে। কাফনের কাপড় পরিহিত ছয় বছরের শিশুটি একটু পর পর মায়ের চোখ মুছে দিচ্ছিল।

রাশেদা বলেন, ‘এ সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাবো’

নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে এর আগেও তারা সড়ক অবরোধ করেন। সে সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলাকামান ব্যবহার করে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আন্দোলন চলাকালে সন্ধ্যার আগে নিয়োগপ্রত্যাশীরা ঘোষণা দেন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শহবাগে অবস্থান কর্মসূচি ‘জাস্টিস ফর টিচার’, ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ শুরু হবে। ৬ হাজার ৫৩১ জনের যোগদান নিশ্চিত করতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশি নির্যাতনের পর মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা বৈঠক করেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদালতে আপিল করা হয়। কাউকে নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হবে না জানানো হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Comments (0)
Add Comment