বিশ্বের চার ভাগের মধ্যে অন্তত তিন ভাগ তরুণের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে। ৯২টি দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশন। ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসকে’ সামনে রেখে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছে ‘জেনারেশন আনলিমিটেড’।
শৈশব ও তারুণ্যে দক্ষতা বিকাশের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সব বয়সের শিশু ও তরুণদের মধ্যেই দক্ষতা নিম্ন স্তরের। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর তরুণদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন বিশেষ করে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ, সম্মানজনক কাজ ও উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা কম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে থাকা তরুণের উচ্চ হার এবং মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে কম দক্ষতা অর্জনের কারণে বিশ্বব্যাপী দেশগুলো দক্ষতা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ তরুণই বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মক্ষেত্রে অংশ নিতে প্রস্তুত নয়।
এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিম্ন আয়ের প্রতি তিন দেশের একটিতে ৮৫ শতাংশেরও বেশি তরুণ মাধ্যমিক স্তর, ডিজিটাল ও চাকরির জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জনের বাইরে রয়েছে। ৭৭টি দেশের তথ্য অনুযায়ী, তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশেরও কম শিশু চারটি ডোমেনের সাক্ষরতা, শারীরিক, সামাজিক ও শেখার মধ্যে অন্তত তিনটিতে বিকাশের পথে রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অধিকাংশ ১০ বছর বা তা তার কাছাকাছি বয়সের শিশু সাধারণ পাঠ্য পড়তে ও বুঝতে পারে না। এই মৌলিক দক্ষতার অভাব তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা ও দক্ষতা বিকাশে অন্তরায় হয়ে উঠছে।
বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ও দক্ষতা সংকট মোকাবিলায় জরুরি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশন। একই সঙ্গে প্রতিটি শিশুর মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে এবং তাদের ঝরে পড়ার ঝুঁকি রোধ করতে প্রতিটি দেশের সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ইউনিসেফের শিক্ষা পরিচালক রবার্ট জেনকিন্স বলেন, ‘অনুপ্রাণিত ও দক্ষ শিশু-তরুণদের একটি প্রজন্ম সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অথচ শিক্ষাব্যবস্থার কারণে বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ শিশু ও তরুণ অক্ষরজ্ঞানহীন, নিরুৎসাহিত এবং অদক্ষ হয়ে রয়েছে।’
দ্য এডুকেশন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক লিসবেট স্টিয়ার বলেন, ‘তরুণদের সফল হওয়ার সর্বোত্তম সুযোগ দিতে এবং মহামারীর কারণে শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে হবে। আমাদের তাদের সামগ্রিকভাবে সহায়তা করতে হবে। শিশু ও তরুণরা কোন ক্ষেত্রে দক্ষতা বিকাশের চেষ্টা করছে তা জানার পাশাপাশি তাদের অগ্রগতি নিয়মিত দেখতে হবে।’