আজ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন। মাত্র ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন বয়সে এই বিপ্লবী নিজের মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছিলেন। হাসি হাসি ফাঁসি পরেছিলেন। আমাদের ছোটবেলায় মা গান ধরতেন, একবার বিদায় দে মা ফিরে আসি… আমরা কি মনে করে জানিনা, কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাতাম।
অনেক দিন ভাবতাম, ইংরেজরা এতদিন থাকলে আমিও নিশ্চিত দুই একটাকে মেরে ক্ষুদিরামের মত ফাঁসিতে চলে যেতাম।
ক্ষুদিরামকে আবার হিংসাও করতাম, মা বলেছিল, সে যেকাজ করেছে হাজারে একজন করতে পারে, আমি হাজারে একজন হতে চাইতাম। বড় হতে হতে দেখি, আমার মা চায় না, আমি ক্ষুদিরামের মতো হাজারে একজন হই। বরং সে চায় আমি আমার কাজিন বোনদের মতো হাজার হাজার ডাক্তারের মধ্যে একজন ডাক্তার হই।
মনের মধ্যে তাই ছোট থেকেই খুব বিদ্রোহ চলতো। সবাই যা যা করে, সেটা আমার করতে মন চাইতো না একদম।
একদিন বুঝলাম ইংরেজরা বা পাকিস্তানিরাই কেবল আমার শত্রু নয়, আমাকে হাজার হাজার লোকের মতো করে গড়ে তুলতে চায় যে সিস্টেম, তার সবকিছুই আমার শত্রু, হাজারে হাজারে শত্রু।
কিন্তু, আমি ক্ষুদিরাম হতে পারি না, তাই বারে বারে হেরে যাই।তাই আজও ক্ষুদিরামদের হিংসা করি, এ হিংসা আসলে কেমন আমি বুঝাতে পারবো না। তবে, একজনমেই সব ভোগের লোভ ছেড়ে, আরেক জনমে আরো বড় কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে যেদিন ক্ষুদিরামের মতো ধৈর্য্য ধরতে শিখে যাব, সেদিন আর আজকের মতো ভাববো না একদম।
এ জনম হাজার হাজার জনমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।