ক্ষতিগ্রস্ত বড় ঋণগ্রহীতার প্রতিষ্ঠানগুলো বাঁচানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও অভিজ্ঞ ব্যাংকারদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে নীতি সহায়তা কমিটি।
যারা ৫০ কোটি ও তারও বেশি টাকা ঋণ নিয়ে একদিকে ইচ্ছাকৃত অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূতভাবে খেলাপি হয়েছেন, তাদের বিষয়টি আলাদাভাবে দেখা হবে।
তবে, আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ব্যবসায়ীদের আবারও নীতি সহায়তা দেয়ার বিরোধিতা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, ঋণগ্রহীতাদের নিরাপদে বের করে নিয়ে আসতে সরকারে উচিত সহযোগিতা করা।
কোভিড মহামারি ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাশিয়-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নিম্ন প্রবৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নীতি সহায়তা এবং সেইফ এক্সিট পলিসির দাবী করে আসছিলেন সরকারের কাছে।
এনিয়ে গেলো ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের সাথে দেখাও করেন।
ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনে নীতি সহায়তা দিতে এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই কমিটি, বিবিধ নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সচল ও লাভজনক পর্যায়ে টেনে নিতে, নীতি সহায়তা দেওয়ার সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী।
তবে, ব্যবসায়ীদের বারবার নীতি সহায়তা দেওয়া নিয়ে ঘোর আপত্তি বিশেষজ্ঞদের। ব্যাংকখাত বিশ্লেষক ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, তথাকথিত নীতি সহায়তার পরিবর্তে, সরকারের উচিত সেইফ এক্সিটে সহযোগিতা করা।
৫০ কোটি টাকা কিংবা তার বেশি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া ব্যবসায়ীরাই প্রথম ধাপে উপকার পেতে যাচ্ছেন। যা নিয়ে ঘোর আপত্তি অর্থনীতিবিদ এম. এম. আকাশের। তিনি বলেন, এক লাখের বেশি এসএমই উদ্যোক্তাকে আগে নীতি সহায়তা দেয়া উচিত। তারপর ধাপে ধারে বড়রা আসতো। এমনিতেই গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯শ’ ৭৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর; এই তিন মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫শ’ ৮৬ কোটি টাকা।
ডিসেম্বরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অবশ্য জানান, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এর বড় অংশই ২০১৭ সালের পর দেয়া।