ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানা চারদিনের সীমান্ত উত্তেজনার অবসানের পর, কাশ্মীর ইস্যুতে হঠাৎ করেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, দুই দেশের যুদ্ধবিরতির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কাজ করতে প্রস্তুত।
রবিবার (১১ মে) দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পেরেছে। ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী নেতৃত্ব যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে লাখো নিরীহ মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে।’
তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘যদিও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি আলোচনা হয়নি, আমি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাজ করছি এবং আমি চেষ্টা করব কাশ্মীর নিয়ে ‘হাজার বছরের পুরোনো সমস্যার’ — একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছাতে।’
ট্রাম্পের এমন মন্তব্য এমন সময় এল, যখন শনিবার (১০ মে) বিকেল ৫টা (ভারতীয় সময়) থেকে উভয় দেশ সীমান্তে সামরিক কার্যক্রম স্থগিত রাখার যৌথ ঘোষণা দেয়। ট্রাম্প দাবি করেন, এই যুদ্ধবিরতির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত দীর্ঘ রাতের আলোচনা।
তবে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধবিরতি হয়েছে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (DGMOs)- এর মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে। পাকিস্তানও জানায়, এই সমঝোতার মূল চালিকাশক্তি ছিল হোয়াটসঅ্যাপ কূটনীতি, যেখানে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও তুরস্কের কূটনৈতিক সহায়তা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
তবুও, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ট্রাম্পের ভূমিকাকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করে বলেন, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার (ট্রাম্পের) নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকা প্রশংসনীয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার প্রতি ভারত বরাবরই স্পর্শকাতর। দিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক-ট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো কবির তানেজা মনে করেন, পাকিস্তানকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা অতীতে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। এটি কাশ্মীর ইস্যুর মূলে থাকা জিহাদী সন্ত্রাসবাদের হুমকি কমাতে কোন দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দিতে পারেনি।