কোনো ব্যক্তি সরকারি ত্রাণ নিলে তাকে কমপক্ষে পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। এমন নির্দেশনা দিয়ে সোমবার নতুন করে আরও ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা ত্রাণ হিসেবে বিতরণ ও এক কোটি ৬০ লাখ শিশু খাদ্য কিনতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৯ হাজার ৬০০ টন চালও বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী ত্রাণ দেয়া হবে এবং তাদেরকে পাঁচটি গাছ লাগানোর জন্য প্রতিজ্ঞা করানো হবে। সে প্রতিজ্ঞা রক্ষায় তার নিজস্ব জায়গায় ফলজ ও বনজ মিলে কমপক্ষে পাঁচটি গাছ লাগবে।’
তিনি বলেন, এখন বৈশাখ মাস চলছে, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস হচ্ছে গাছ লাগানোর সময়। সেই দিক থেকে এই সময়ে গাছ লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। সে সরকারি একটা সহযোগিতা পাচ্ছে, সে যদি পাঁচটি গাছ লাগায় এটা আগামীতে তার সম্বল হবে। ব্যক্তির সম্বল হওয়া মানে রাষ্ট্রেরও হওয়া। পরিবেশের ওপরও এর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আমরা মনে করি।’
এখন থেকে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে এটা মানতে হবে বলেও জানান এ সিনিয়র সচিব।
এদিকে সরকারি এই বরাদ্দের টাকা দিয়ে ইচ্ছা করলে হতদরিদ্রদের শাক-সবজি কিনেও ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করা যাবে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়।
ত্রাণ বরাদ্দের আদেশে বলা হয়, জেলা প্রশাসকরা দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুসরণ করে এ বরাদ্দ বিতরণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় হিসাব সংরক্ষণ করবেন। সিটি করপোরেশন এবং পৌর এলাকায় বেশি সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ বসবাস করেন বিধায় জেলা প্রশাসকদের বরাদ্দের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
শিশু খাদ্য ক্রয়ের শর্তাবলীতে বলা হয়, শিশুখাদ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিধি-বিধান ও আর্থিক নিয়মাচার যথাযথভাবে প্রতিফলন করতে হবে। জিটুজি পদ্ধতিতে কিনে মিল্কভিটার উৎপাদিত গুঁড়োদুধ চলমান কাজে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া শিশু খাদ্য হিসেবে খেজুর, বিস্কুট, ফর্টিফাইড তেল, ব্রাউন চিনি, সুজি, মসুর ডাল, সাগু, ফর্টিফাইড চাল, ওয়াটার পিউরিফায়ার ট্যাবলেট, বাদাম, মানসম্মত রেডিমেড ফুড ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য স্থানীয়ভাবে কিনে বিতরণ করতে হবে।
জেলা প্রশাসকরা আরোপিত শর্তাবলী যথাযথভাবে অনুসরণ করে ছাড় করা অর্থে শিশু খাদ্য কিনে বিতরণ করবেন এবং নিরীক্ষার জন্য হিসাব সংরক্ষণ করবেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রথম ধাপে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরে তিন দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সেই ছুটি বাড়ানো হয়। এ সময়ে মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এতে শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তবে সরকার ত্রাণ দিয়ে এসব কর্মহীন মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছে।