রাজপুত্রের শিক্ষা শেষ। বেশ কিছু দিন কাটিয়ে এসেছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যেই; কখনও জেলে, আবার কখনও কৃষকের ছদ্মবেশে। সাধারণ মানুষের মাঝে থেকে তাদের জীবনযাপন পর্যবেক্ষণ করে রাষ্ট্র পরিচালনার সূক্ষ্ম দিকগুলো অনুধাবন এবং অর্জন করবার প্রক্রিয়া শেষ। এখন বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়সে পদার্পণ করেছেন শ্যাং সাম্রাজ্যের হবু সম্রাট য়ু-ডিং।
বাবা-মা প্রতিবেশী রাজ্যের রাজকন্যাকে পাত্রী হিসেবে সঙ্গে করে নিয়ে আসলেন য়ু-ডিং এর জন্য। প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়ে গেলেন তারা একে অপরের। অদ্ভূত এক মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্ক গড়ে উঠলো দুজনের মধ্যে। পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও মানসিক বোঝাপড়া বেশ ভালোভাবেই তৈরী হয়ে গিয়েছিলো তাদের মাঝে। দুজনেই ভীষণ রুচিশীল। শিল্প-সাহিত্যের পছন্দও তাদের একই রকম।
কিশোরী বয়সে সম্রাজ্ঞী হলেও ভীষণ যোগ্য ছিলেন সম্রাট য়ু-ডিং এর স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়া সেই রাজকন্যা। তার নাম ফু-হাও। বয়স কম হওয়া সত্ত্বেও যুদ্ধে তার পারদর্শিতা ও দক্ষতা ছিলো অবাক করবার মতো। প্রায় ৬০ জনেরও বেশি রক্ষিতা ছিলেন সম্রাট য়ু-ডিং এর। তবে মাত্র তিন জন পেয়েছিলেন তার স্ত্রীর মর্যাদা। আর ফু-হাও ছিলেন তিন স্ত্রীর মাঝে তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
শ্যাং সাম্রাজ্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সম্রাট ছিলেন য়ু-ডিং এবং ফু-হাও ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ জেনারেল। এ ছাড়াও তিনি ছিলেন একজন যোগ্য রাজনীতিবিদ, আধ্যাত্মিক নেতা ও উপদেষ্টা। অপ্রতিরোধ্য এই সম্রাজ্ঞী জেনারেলের সম্পর্কে কিন্তু কোনো দলিল আমরা পাই নি। নিশ্চয়ই তার সম্পর্কে লেখা হয়েছিলো; হয়তো প্যাপিরাসে, কিংবা কাপড়ে, যা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো কালের আবর্তে।
প্রায় ৩০০০ বছর পর অদ্ভূতভাবেই উন্মোচিত হলো সম্রাজ্ঞী ফু-হাও এর ইতিহাস, জাদুকরীভাবে মিললো তার বহুমূল্যবান সমাধির খোঁজ। ১৯৭৬ সালে হঠাৎ করেই পাওয়া এই সমাধিতে তার নাম-খোদিত ওরাকল-হাড় পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমেই প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্যাম্পবেল প্রমাণ করেন যে, এটি ফু-হাও এর সমাধিক্ষেত্র।
ওরাকলে প্রচন্ডভাবে বিশ্বাসী ছিলেন শ্যাং সাম্রাজ্যের জনগণ। ওরাকল হচ্ছে এক ধরনের দৈব যোগাযোগের মাধ্যম। প্রাণীদেহের, বিশেষ করে ষাঁড়ের হাড় কিংবা কচ্ছপের খোলসে প্রশ্ন লিখে সেটাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় খুব যত্ন করে পোড়ানোর পর যে সূক্ষ্ম ফাটল সৃষ্টি হতো, তাকে ইঙ্গিত ধরেই নিজেদের কাঙ্ক্ষিত উত্তর বুঝে নিতেন শ্যাং জনগোষ্ঠী। আর এই উত্তর বা বার্তা তাদেরকে তাদের পূর্বসূরিরা স্বর্গ থেকে পাঠাতেন বলেই বিশ্বাস করতেন তারা। যে কোনো কাজ, বিশেষ করে যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী জানার জন্য ওরাকল-হাড়ের ব্যবহার করতেন তারা।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, শ্যাং সাম্রাজ্যের শুরুটা হয়েছিলো কিংবদন্তী পাখি ফিনিক্সের মালিকের হাত ধরে। তিনিই ছিলেন এই সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট। খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ সাল থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০৫৬ সাল পর্যন্ত এই শ্যাং সাম্রাজ্য চীনের একটি বেশ বড় অংশ শাসন করেছে। ৬০০ বছরের শ্যাং সাম্রাজ্যের ইতিহাসে য়ু-ডিং ছিলেন সবচেয়ে যোগ্য সম্রাট, আর এর পেছনে ফু-হাও এর অবদান ছিলো অপরিসীম। সম্রাট য়ু-ডিং এর সময়ে জনগণ খুবই সন্তুষ্ট ছিলো এবং এই কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি তার স্ত্রী ফু-হাও এর। একজন স্ত্রী হিসেবে, একজন মা হিসেবে, একজন নারী হিসেবে তিনি ছিলেন প্যারাগন; একটি পরিপূর্ণ আদর্শের প্রতীক।
দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য সব ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেছেন ফু-হাও, যা শ্যাং সাম্রাজ্যে তার যোগ্যতা ও স্বাতন্ত্র্যের এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। পুরুষতান্ত্রিক শ্যাং সমাজে স্যাক্রিফিসিয়াল অনুষ্ঠানগুলোর প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব পালনের মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি করেছেন বলেই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, ফু-হাও ছিলেন একজন সর্বোচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন ও সম্মানিত নারী।
সম্রাট য়ু-ডিং নিজেও ছিলেন ভীষণ স্মার্ট এবং ক্যারিজমেটিক। এক কথায় বললে, এক অনন্যসাধারণ প্রতিভার অধিকারী সম্রাট ছিলেন তিনি। ভীষণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী এই সম্রাট এবং সর্বগুণে গুণান্বিত ফু-হাও এর মেলবন্ধনে শ্যাং সাম্রাজ্য সর্বোচ্চ উৎকর্ষতার পথ দেখেছে। এই দুজনের প্রচেষ্টায়ই সম্ভব হয়েছিলো শ্যাং সাম্রাজ্যের ইতিহাসে সর্বাধিক উন্নয়ন।
আগেই বলা হয়েছে, শুধু অন্দরমহল ও পূজার মন্ডপেই ফু-হাও সফল ছিলেন না, যুদ্ধক্ষেত্রেও তিনি প্রচন্ডভাবে সফল ছিলেন। অসংখ্যবার তিনি একাই সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। ক্রমাগত তিনি সফলভাবে বৃদ্ধি করেছেন রাষ্ট্রের পরিধি। নিজের স্বাক্ষরযুক্ত ‘ইউয়া’ কুড়াল দিয়ে শক্তিশালী যোদ্ধা হিসেবে প্রতিবেশী বিদ্রোহী রাজ্যকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তু-ফ্যাং গোষ্ঠী প্রজন্মের পর প্রজন্ম শ্যাং –দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলো। এই তু-ফ্যাং গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে বিজয়ীর বেশে নিজ সাম্রাজ্যে ফিরেছেন ফু-হাও। জানা যায়, ফু-হাও যতোক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে না আসতেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত সম্রাট য়ু-ডিং প্রাসাদের বাইরে তার আসবার পথের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতেন। প্রিয়তমা সম্রাজ্ঞীর প্রতি এ যেনো সম্রাটের অপূর্ব ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
এতো সুখেরও কিন্তু শেষ আছে। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে অকালমৃত্যু হয় এই কিংবদন্তী নারীর। কেউ বলেন, সন্তান জন্ম দেবার সময় তিনি মারা গেছেন। আবার কেউ বলেন, যুদ্ধে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তবে শ্যাং –দের কিছু অভ্যাস নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা হয়েছে। শ্যাং –রা, বিশেষ করে রাজবংশীয়রা যে কোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানে কিংবা প্রতিদিনই কোনো কারণ ছাড়াই রাইস ওয়াইন পান করতেন। আর এই রাইস ওয়াইন সংরক্ষণ ও পানের জন্য তারা সবসময় ব্রোঞ্জের তৈরী পাত্রই ব্যবহার করতেন। ব্রোঞ্জ তৈরী হয় কপার, টিন ও লেডের সংমিশ্রণে। আর লেড মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত পদার্থ। গবেষণায় দেখা গেছে, রাইস ওয়াইনে লেডের শোষণ হার অনেক বেশি। চার দিন পর লেডের এই শোষণ মাত্রা প্রায় ৮০ হাজার মাইক্রোগ্রাম প্রতি লিটারে পৌঁছে যায়, যেখানে দৈনিক লেড গ্রহণের স্বাভাবিক পরিমাণ মাত্র ৭৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি লিটার। গবেষকরা যে পানীয় গ্লাভসের সাহায্য ছাড়া খালি হাতে ছুঁতেও ভয় পাচ্ছিলেন, সেই পানীয় শ্যাং –রা পান করে গেছেন দিনের পর দিন। নিজের অজান্তেই তারা অতিমাত্রায় বিষাক্ত এক পানীয় সেবন করে যাচ্ছিলেন প্রতিদিন। আর এটিই ছিলো শ্যাং –দের অতি অল্প বয়সে মারা যাবার কারণ। হয়তো ফু-হাও নিজেও এই বিষাক্ত পানীয়ের কুপ্রভাবে এতো অল্প বয়সে প্রাণ হারিয়েছেন।
ফু-হাও এর অকালমৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারেন নি সম্রাট য়ু-ডিং। ভীষণ ভেঙে পড়েন তিনি। নিজেদের পারিবারিক কবরস্থানেও সমাহিত করেন না তিনি ফু-হাও কে। প্রাসাদের ভেতরেই এক জায়গায় তৈরী করা হয় ফু-হাও এর বিশেষ সমাধি। সম্রাটের বিশ্বাস, প্রাসাদের ভেতরে শায়িত থেকেই সম্রাজ্ঞী তার দায়িত্ব পালন করবেন, সম্রাটকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন এবং সর্বক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখবেন সবাইকে। সমাধিটি প্রাসাদের ভেতরে হবার কারণেই হয়তো টুম্ব রবাররা তা খুঁজে পায় নি। পরবর্তীতে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা তার ইতিহাস জানবার জন্যই খুঁজে বের করেন সম্পূর্ণ অক্ষত এই ইতিহাসের আকর।
ফু-হাও এর মৃত্যুতে সম্রাটের মনে এবং শ্যাং সাম্রাজ্যে যে শূন্যতা তৈরী হয়েছিলো, তা থেকে বের হতে সম্রাট য়ু-ডিং এর ভীষণ কষ্ট হয়েছিলো। তিনি কোনোরকম কার্পণ্য করেন নি ফু-হাও এর সমাধিটি তৈরী করবার ক্ষেত্রে। যুদ্ধে ব্যবহৃত তার সমস্ত অস্ত্র দেয়া হয়েছিলো তার সাথে। অস্ত্রগুলো ছিলো মূল্যবান ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরী। শ্যাং –দের কাছে সোনা বা রূপার তেমন গুরুত্ব না থাকলেও ব্রোঞ্জ ছিলো তাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। ফু-হাও এর সমাধিতে দেয়া সব জিনিসপত্রই ছিলো ব্রোঞ্জের তৈরী। তার সাথে দেয়া যুদ্ধাস্ত্রগুলো প্রমাণ করে, ফু-হাও ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণীর মিলিটারী কমান্ডার।
মোট ৭৫৫টি জেড পাথরের তৈরী বস্তু, ৫৬৪টি হাড়ের তৈরী বস্তু, ৪৬৮টি ব্রোঞ্জের তৈরী বস্তু, বিভিন্ন পাথরের তৈরী ৬৩টি বস্তু, হাতির দাঁতের তৈরী ৫টি বস্তু, মাটির তৈরী ১১টি বস্তু এবং ৬৯০০ টুকরা কৌরির খোলস পাওয়া গিয়েছিলো ফু হাও এর সমাধিতে। প্রত্যেকটিই শ্যাং-দের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে গণ্য হতো। কৌরির খোলস সাধারণত শ্যাং-দের মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
পরজগতে তার কষ্ট দূর করবার জন্য দাস-দাসী ও বন্দীসহ মোট ১৬ জনকে তার সাথে সমাধিস্থ করা হয়। সমাধিতে যুদ্ধবন্দীদের মাথা ও শরীর আলাদা আলাদা পাওয়া গিয়েছিলো। এ ছাড়াও দুটি শিশুর দেহও পাওয়া গিয়েছে। অনেকেরই ধারণা, এরা ফু-হাও এরই সন্তান ছিলো। ছয়টি কুকুরও দেয়া হয়েছিলো ফু-হাও এর সাথে।
সমাধি থেকে পাওয়া সম্পদগুলো থেকে সম্রাজ্ঞী ফু হাও এর চরিত্র সম্পর্কে সহজেই ধারণা লাভ করা যায়। নিঃসন্দেহে তিনি ছিলেন সৌন্দর্যের পূজারী। এ ছাড়াও অনুমান করা যায় শ্যাং সাম্রাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরন সম্পর্কে। বহু দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্রোঞ্জ তৈরীর অপরিহার্য উপাদান কপার বা টিন এটাই প্রমাণ করে যে, শ্যাং সাম্রাজ্যে বাণিজ্য ব্যাপক প্রসার লাভ করে। ব্রোঞ্জের আয়নাগুলো এসেছিলো সেন্ট্রাল এশিয়া থেকে। প্রাণীর মুখবিশিষ্ট ছড়িগুলো এসেছিলো সাইবেরিয়া থেকে। আর মূল্যবান সামুদ্রিক কৌরিগুলো এসেছিলো ভারত সাগর থেকে।
শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, ব্যবসায়িক দিক থেকেও ফু হাও এর সাম্রাজ্য ছিলো ভীষণ অগ্রগামী। আর এর অকাট্য দলিল হলো ফু হাও এর সমাধি। কিং তাত (তুতেনখামুন) এর সমাধি থেকেও প্রায় ৮০ বছর পর খুঁজে পাওয়া ফু হাও এর সমাধিটি ছিলো অফুরন্ত ঐশ্বর্যে ভরপুর এবং তুতেনখামুনের সমৃদ্ধ সমাধি থেকে এর গুরুত্ব কোনো অংশেই কম ছিলো না।
ফু-হাও মারা যাবার পর সম্রাট য়ু-ডিং যতো বার যুদ্ধে গিয়েছেন, ততো বারই সৈন্যদলকে সঙ্গে নিয়ে ফু-হাও এর সমাধিতে তার আশীর্বাদ লাভের জন্য প্রার্থনা করেছেন। মিশরীয়দের মতো তারাও বিশ্বাস করতেন যে, মৃত্যুর পরে আরেকটি জীবন আছে এবং মৃত ব্যক্তি স্বর্গে বাস করেন। তারা বিশ্বাস করতেন, স্বর্গে অবস্থানরত মৃত ব্যক্তির আশীর্বাদ লাভে সাম্রাজ্যের মঙ্গল-সাধন হয় ও সমস্ত বিপদ-আপদ দূর হয়ে যায় এবং একইভাবে মৃত ব্যক্তি অসন্তুষ্ট থাকলে সাম্রাজ্যের ক্ষতি সাধিত হয়। তাই মৃতের আত্মাকে তুষ্ট রাখতে বিশেষ কাজের আগে তার উপাসনার প্রচলন ছিলো। তা ছাড়া ফু-হাও তো ছিলেন অনেকের মাঝে অন্যতম। শুধু তুষ্ট রাখতেই নয়, বরং মন থেকে সম্মান দিয়ে তাকে আরাধনা করা হতো।
ফু-হাও এর সম্পর্কে বলা হয়, ‘হার্ড অ্যাজ বোনস, সফট অ্যাজ চীজ’। পরিস্থিতিবিশেষে অত্যন্ত কঠিন হলেও তার অন্তর ছিলো ভীষণ মোলায়েম। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন নির্ভীক ও ভীষণ সাহসী। যুদ্ধ-প্রশিক্ষণের শুরুটাও হয়েছে ছেলেবেলায়ই, যার প্রমাণ মেলে যুদ্ধক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ যোগ্যতার প্রদর্শন দেখে। তার অস্ত্র-চালনার দক্ষতা এক অসাধারণ সামরিক শক্তিরই বহিঃপ্রকাশ। ফু-হাও অনেক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এবং য়ু-ডিং এর পরবর্তী সম্রাটও ছিলেন তার গর্ভেরই সন্তান।
চাইনিজ কাহিনীগুলো রঙিন সব গল্পে পরিপূর্ণ। তেমনি এক রঙিন আখ্যান সম্রাজ্ঞী ফু-হাও এর। চীনের হেনান প্রদেশের অ্যানিয়েং শহরে প্রায় ৫০ হাজার সমাধি পাওয়া গিয়েছে। তবে ফু-হাও এর সমাধিটি ছিলো তাদের মাঝে সবচেয়ে আলাদা। কারণ এটিই একমাত্র সমাধি, যাকে লুট করা সম্ভব হয় নি। তিন হাজার বছর ধরে সম্পূর্ণ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে ফু-হাও এর মূল্যবান সমাধি। কথায় আছে না, ইতিহাসকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব নয়, ইতিহাস একদিন না একদিন তার ডালপালা মেলে ঠিকই দাঁড়াবে, আর প্রতিদিন নতুন কোনো চমক দেখিয়ে হতবাক করে দিবে সবাইকে।
রেফারেন্সঃ
•https://www.youtube.com/watch?v=y1cKMO8w5_Y
•https://www.youtube.com/watch?v=E54vJs3kLYY
•https://www.youtube.com/watch?v=e6MlIpg2eCI
•https://www.youtube.com/watch?v=OuSX9bXRLAc
•https://www.youtube.com/watch?v=zHYF-o7tQ4o
[লেখকঃ চেয়ারপার্সন, সিদ্দিকি’স ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। কোষাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল’স এসিস্ট্যান্স ফাউন্ডেশন। ইতিহাস, বিজ্ঞান নিয়ে লেখা staycurioussis.com (বাংলা এবং ইংলিশ) ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা]