জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

গাজায় আটকে রাখা সব জিম্মিদের শিগগির মুক্তি দিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, তার কথা মতো কাজ না করলে একজন হামাস সদস্যকেও নিরাপদে থাকতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ) এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে পোস্ট করে বলেন, ‘সব জিম্মিদের এখুনি মুক্তি দিন এবং আপনারা যাদের হত্যা করেছেন, তাদে মরদেহ শিগগির ফিরিয়ে দিন। অন্যথায় আপনাদের সর্বনাশ হবে।’

ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া আট জিম্মির সঙ্গে দেখা করার পর এই বক্তব্য জানান।

ট্রাম্প তার দীর্ঘ পোস্টে আরও জানান, তিনি ‘(হামাসকে নির্মূল করার) কাজ শেষ করার জন্য যা যা প্রয়োজন’, তার সবই ইসরায়েলকে দেবেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘আমি যা বলি তা না শুনলে একজন হামাস সদস্যও নিরাপদ থাকবে না।’

এর কয়েক ঘণ্টা আগেই হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে, জিম্মি মুক্তি ও গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে তারা এখন সরাসরি হামাসের সঙ্গে দরকষাকষি করছে।

উত্তর গাজার জাবালিয়ায় প্রথম রমজানের ইফতার তৈরি করছেন ফিলিস্তিনি মুসলিম নারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্প তার পোস্টে গাজাবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। কিন্তু আপনারা জিম্মিদের আটকে রাখলে সেটা সম্ভব হবে না।’

‘কিন্তু আপনারা যদি সেটা করেন, তাহলে মারা পড়বেন। বুদ্ধিমানের মতো সিদ্ধান্ত নিন। জিম্মিদের এখুনি মুক্তি দিন অথবা আপনাদেরকে পরবর্তীতে নরক-যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে’, যোগ করেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প এর আগে জানিয়েছিলেন, গাজাকে তিনি একটি ‘বড় আবাসন প্রকল্প’ হিসেবে বিবেচনা করেন। তিনি মনে করেন, এই অঞ্চলের উন্নয়ন করে একে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম। ছবি: সংগৃহীত

হামাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ট্রাম্পের বুধবারের মন্তব্য গাজার যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তিকে অবমাননা করেছে এবং সার্বিকভাবে, একে হুমকির মুখে ফেলেছে।

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম সিএনএনকে জানান, ট্রাম্পের বক্তব্য ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়গুলোকে আরও জটিল করেছে’ এবং এতে ইসরায়েলি সরকার এই চুক্তি বাস্তবায়ন না করার সাহস অর্জন করেছে।

কাসেম জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের সব শর্ত পূরণ করেছে, কিন্তু ইসরায়েলি সরকার ‘দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে দরকষাকষি এড়িয়ে যাচ্ছে।’

তিনি অনুরোধ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলকে দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করার জন্য চাপ দেওয়া।

রবিবার প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন পর ইসরায়েল গাজায় মানবিক ত্রাণের প্রবাহ বন্ধ করে দেয়।

ইসরায়েল দাবি করে, দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন না করে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়িয়ে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু হামাস এই প্রস্তাব নাকচ করে জানায়, দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধের স্থায়ী নিরসন ও গাজা থেকে ইসরায়েলি  সেনা প্রত্যাহার ছাড়া অন্য কোনো প্রস্তাবে তারা রাজি নয়।

এর জবাবেই ত্রাণ বন্ধ করে ইসরায়েল। যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস তাদের নতুন চুক্তি মেনে না নিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গাজায় কোনো ত্রাণ প্রবেশ করতে না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে নেতানিয়াহুর সরকার।

Comments (0)
Add Comment