ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন, আধিপত্যবাদ বিরোধী রাষ্ট্র গঠন এবং জাতীয় ঐক্যসহ দশটি বিষয়ে বিএনপি সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করার কথা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক শেষে কথা জানিয়েছে দলটি।
গণঅভ্যুত্থানের পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দাবির পাশাপাশি বড় ও ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি প্রস্তুতি কেমন হবে- তা নিয়ে এখন আলোচনা সর্বত্র।
এর ধারাবাহিকতায় গেল ২১ জানুয়ারি অতীতের রেকর্ড ভেঙে একমঞ্চে দেখা যায় ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর দুই শীর্ষ নেতাকে। এই সাক্ষাৎ ঘিরে বৃহত্তর ইসলামী জোটগঠনের প্রয়াস আরো দৃশ্যমান হয়। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকেও দেখা গেলো নির্বাচনি জোট নিয়ে উদ্যোগী হতে।
২২ জানুয়ারি খেলাফত মজলিসের সাথে বৈঠকের ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল জানান, আধিপত্যবাদ বিরোধী রাষ্ট্রগঠন ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ইসলামী আন্দোলনের সাথে একমত পোষণ করেছে তাদের দল। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের বিষয়েও ঐকমত্যের কথাও জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই গণতান্ত্রিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন। দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও চাঁদাবাজদের নির্দিষ্ট বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। ভোটাধিকারসহ সকল মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা। ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’
বৈঠক প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের আমীর রেজাউল করীম জানান, জাতীয় ঐক্যসহ দশটি বিষয়ে বিএনপির সাথে ঐকমত্য পোষণ করে তার দল। এসময় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কার শেষে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় তারা।
রেজাউল করীম বলেন, ‘এটা আমরা আগে থেকেই বলেছি। আমরা দ্রুতসময় শব্দ ব্যবহার করছি, যার মানে হলো খুব বেশি সময় না নিয়ে যৌক্তিক। আর সে সময়টা হচ্ছে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। আর এর ছয় মাস তো প্রায় চলেই গেলো। আর এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, এটাই মূলত আমাদের কথা।’
দেশের রাজনীতিতে ভোটের সময় নির্বাচনি মোর্চা কিংবা রাজনৈতিক জোট গঠন স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই দেখা হলেও হাসিনা আমলের তিন বিতর্কিত নির্বাচনে ভোট কিংবা জোট রাজনীতি ছিল অনেকটাই আলোচনার বাহিরে। নেতারা বলছেন এমন বৈঠক রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।