ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ফেসবুকে পোস্ট যদি না যেতে তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। এ ঘটনার জন্য যে কোরআন রেখেছে সে দায়ী, যে করিয়েছে সে দায়ী, যারা পোস্টের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই না করে পরিস্থিতি তৈরি করলো তারাও দায়ী। একই সঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও দায়ী।
আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, এটি নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে, বিশ্বব্যাপী এটি ভাবনার বিষয়। এ সপ্তাহেই আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করব। একই সঙ্গে আইএমইডির সঙ্গেও যোগাযোগ করব।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড না হতো তাহলে এ ঘটনা বিস্তৃত হয়ে সারাদেশে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ঘটে। আমি ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলাম, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এটি নিয়ে বসেছিলাম। তখন এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। ইউরোপের পার্লামেন্টারি চেয়ারম্যানকে বলেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর, কক্সবাজারে রামুর ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ঘটে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি, তোমরা কী ব্যবস্থা নিয়েছ? তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ব্যক্তি পরিচয় লুকিয়ে পোস্ট দেয়, কিংবা বিদেশ থেকে পোস্ট দেয়। উই ফাইন্ড অথরিটি, সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস প্রোভাইডার।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপেও একটি সার্ভেতে উঠে এসেছে ইউরোপের ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে সোশ্যাল মিডিয়া অনেক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সমাজের শান্তির জন্য হুমকি। যে সব ঘটনা ঘটেছে সেটির দায় সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এটি নিয়ে ভাবার বিষয় আছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এটি উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ফেসবুকে পোস্ট যদি না যেতে তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। এ ঘটনার জন্য যে কোরআন রেখেছে সে দায়ী, যে করিয়েছে সে দায়ী, যারা পোস্টের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই না করে পরিস্থিতি তৈরি করলো তারাও দায়ী। একই সঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও দায়ী। আগেও বিভিন্ন ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। সবকিছুই এমনভাবে পরিচালনা করা উচিত, যাতে সেটি খারাপ কাজে ব্যবহার করা না হয়, যাতে স্বচ্ছতা থাকে। ফেসবুকে পরিচয় গোপন করে পোস্ট দেওয়া হয়, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
সরকার অনেক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, টেলিফোনের সিম কিনতেও আইডি কার্ড লাগে, একজন ব্যক্তি কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। একটি করপোরেট হাউজ কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। বাংলাদেশেও আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেসবুক আইডি খুলতে পারে, সেটি করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি।