পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র হতে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেল ইঞ্জিন। এবারে প্রথম ট্রেন চালকরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রুম বসে ট্রেন চালাচ্ছেন। এ যাবত শুধুমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বগি নিয়ে নিজেরা গরমে কষ্ট করে যাত্রীদের সেবা দিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে তারা ট্রেন চালিয়েছেন। এখন চালকরা নিজেদের এসি রুমে বসে স্বস্তিতে ট্রেন চালাচ্ছেন।
গত ৩ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ৪ টি ইঞ্জিন রাজশাহী ও ঈশ্বরদী রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০ টি ইঞ্জিন পশ্চিমাঞ্চল রেলে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ৫ টি ঈশ্বরদীতে এসে পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুধু কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে চারটি ইঞ্জিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে। কারণ দিনের বেলায় ঈশ্বরদী ও রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী একটি ট্রেনই রয়েছে। ইঞ্জিনগুলো চালানোর সময় বাইরের বিশেষজ্ঞ সঙ্গে রয়েছেন। চালানোর সময় যেসব ক্রুটি পাওয়া যাবে, পরে সেগুলো ঠিক করে আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো চালানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্র হতে আমদানি করা ইঞ্জিন প্রথম চালিয়েছেন লোকোমোটিভ মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম। তৌহিদুল ইসলাম রবিবআর বলেন, এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। কিন্তু আপাতত সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ৯৩ কিলোমিটার গতিতে তিনি চালিয়েছেন জানিয়ে আরও বলেন, ইঞ্জিনের আগে-পিছে ক্যামেরা ও জিপিএসও লাগানো রয়েছে। এতে ট্রেনের অবস্থান অন্ধকারেও বোঝা যাবে। গড়মে লোহা গরম হয়ে যায়। তখন গরম লাগে বেশি। আবার শীতে লোহা ঠাণ্ডাও হয় বেশি। তখন ঠাণ্ডা লাগে। সবসময় আমাদের শীত-গরমের কষ্টে ভুগতে হয়। যাত্রীরা এসিতে যেতে পারলেও চালকদের কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এই প্রথম চালকদের জন্য এসি কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন স্বস্তিতে চালকরা ট্রেন চালাতে পারবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জোয়াদ্দার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা লোকামোটিভ দ্রুত গতি তুলতে সক্ষম। লোকামোটিভ ইঞ্জিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় চালক স্বস্তিতে ট্রেন চালাতে পারবেন। ইতোমধ্যে ৫টি লোকামোটিভ ইঞ্জিন ঈশ্বরদী লোকোসেডে এসে পৌঁছেছে। ৪টির পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। আরও কয়েকটি লোকোমোটিভ দ্রুতই পাকশী বিভাগে সংযুক্ত হবে, সেগুলো পরীক্ষামূলক চালানোর পর দূরের রুটে চালানো হবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় সহকারী পরিবহণ কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বাবু জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলে নতুন লোকোমোটিভ (সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন) যুক্ত হওয়ায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলও বাড়বে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে।
পশ্চিমাঞ্চলের রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, দেশে ৩ হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ছিল। এবার ৩ হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের অত্যাধুনিক ৪০টি ইঞ্জিন পর্যায়ক্রমে পশ্চিম রেলে যুক্ত হবে। ইঞ্জিনে এসি সুবিধা থাকায় চালকরা স্বস্তিতে ট্রেন চালাতে পারবেন।