আওয়ামী সরকারের এমপিদের নামে আনা ৪২টি পাজেরো গাড়ি নিলামের পরিবর্তে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ছাড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অন্তত ৪শ কোটি বাড়তি রাজস্ব লাভের আশায় এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত। তবে অতিরিক্ত শুল্কায়নের কারণে গাড়িগুলো বিক্রি না হওয়ার শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, আমদানিকারকরা যদি তার অনুকূলে ছাড় করার জন্য যথাযথ শুল্ক পরিশোধ করে তাহলে ছাড় করা হবে। না হলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হবে।
গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এই গাড়িগুলো নিয়ে আসা হয়েছিল বন্দরের কার শেডে। আইন অনুযায়ী ৩০ দিন অর্থাৎ ১৪ অক্টোবরের মধ্যে আমদানিকারক এসব গাড়ি ছাড় না করায় নিলামের জন্য ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, নিলাম বা আমদানিকারক ছাড় করিয়ে নিয়ে যাক- যেভাবেই হোক না কেন, চট্টগ্রাম বন্দর চায় জায়গা খালি হোক। আর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, এমপিরাই তো নেই। তাহলে গাড়ির আমদানিকারক আবার কে! এ বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
তবে নিলাম না করে আমদানিকারকদের কাছে গাড়ি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নতুন করে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে বলে শঙ্কা বিডারদের। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, রাজস্ব রাজস্ব বোর্ডের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলে বিডারদের কিছুই বলার নেই।
চট্টগ্রামের মেসার্স আর রেজা ট্রেডার্সের মালিক সৈয়দ ইউনুছ খান বলেন, যেহেতু এমপিরা নেই, তাই গাড়িগুলো স্বাভাবিক নিয়মে নিলামে বিক্রি করা উচিত।
জাপান থেকে আমদানি করা প্রতিটি গাড়ির আমদানি মূল্য ১ থেকে দেড় কোটি টাকা। তার সঙ্গে সাড়ে আটশ শতাংশ হিসাবে আমদানি শুল্ক যুক্ত হলে গাড়ির বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকা। এতো চড়া দামে এই গাড়ি বাজারে বিক্রি হবে না বলে দাবি গাড়ি ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১০ কোটি মূল্য হিসেবে এসব গাড়ি কেউ ছাড় করাবে বলে মনে হয় না। আমদানিকারকদের চিঠির মাধ্যমে ছাড় হবে কিনা জিজ্ঞাসা করে অতিদ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করা উচিত।
উল্লেখ্য, তারানা হালিম কিংবা জান্নাত আরা হেনরীর গাড়িসহ মোট ৪২টি গাড়ি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বন্দরে আটকা পড়লেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ ৭ জন তৎকালীন সংসদ সদস্য জুলাই মাসেই গাড়ি ছাড় করে নিয়েছে গত বছরের জুলাই মাসে।