এবার বিশ্বকাপের বলেও যোগ হলো এআই, সঙ্গে আছে আরও এক বিশেষত্ব

প্রতি বিশ্বকাপেই টুর্নামেন্টের জন্য তৈরি বিশেষ বল আলাদা করে নজর কাড়ে। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের জন্য এডিডাস তৈরি করেছে ‘ট্রায়ন্ডা’। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ পার্কে জমকালো অনুষ্ঠানে গতকাল এই বল প্রকাশ্যে এনেছে ফিফা।

এই বল প্রকাশের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জার্মানির ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান, ব্রাজিলের কাফু, ইতালির আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, স্পেনের জাভি হার্নান্দেজ এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান। এরপরই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ট্রায়ন্ডাকে সবার সামনে তুলে ধরেন।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা আর মেক্সিকো—এই তিন দেশ যৌথভাবে আয়োজক হওয়ায় বলটির নামকরণ হয়েছে ‘ট্রায়ন্ডা’। এখানে ‘ট্রি’ মানে তিন আয়োজক দেশ, আর ‘ওন্ডা’ এসেছে স্প্যানিশ শব্দ থেকে, যার অর্থ তরঙ্গ বা ছন্দ। বলটির নকশায় ব্যবহার করা হয়েছে নীল, লাল আর সবুজ রং—যা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা আর মেক্সিকোর প্রতীক।

ট্রায়ন্ডার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এটি প্রথম বিশ্বকাপ বল যা আয়োজক দেশগুলোর আবহাওয়া মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে। জুন-জুলাইয়ে ১৬টি শহরে ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়া থাকে। কোথাও আর্দ্রতা বেশি, কোথাও উচ্চতা বা তাপমাত্রা আলাদা। এডিডাস বলটিকে এমনভাবে তৈরি করেছে যেন সব পরিবেশে একই রকম অনুভূত হয়। এজন্য আলাদা টেক্সচার ও বাড়তি গ্রিপ দেওয়া হয়েছে।

এডিডাসের গ্লোবাল ক্যাটাগরি ডিরেক্টর সোলেন স্টর্ম্যান বলেন, ‘আমরা জানতাম ১৬টি ভেন্যু আছে। প্রতিটা জায়গার আবহাওয়া ভিন্ন। তাই আমরা নিশ্চিত হতে চেয়েছি এই বল সব জায়গায় কাজ করবে।’

শুধু জলবায়ু নয়, বলটিতে যুক্ত করা হয়েছে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত চিপও। আগের ‘আল রিহলা’র মতো এটিতেও চিপ থাকবে, তবে এবার সেটি বলের একপাশে বসানো হয়েছে। এই সেন্সর রেফারিদের দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে খেলোয়াড়দের স্পর্শ, ড্রিবল, পাসের গতি ও অন্যান্য তথ্যও পাওয়া যাবে। এডিডাস আশা করছে ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এগুলো বড় ভূমিকা রাখবে।

এডিডাস জানিয়েছে, এটি তাদের তৈরি সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত বিশ্বকাপের বল। কোম্পানিটি নিজস্ব ল্যাব ও লাফবোরো ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলে উইন্ড টানেল টেস্ট করেছে। এরপর বলটি ব্যবহার করেছেন মেজর লিগ সকার আর লিগা এমএক্সের খেলোয়াড়রাও।

স্টর্ম্যান বলেন, ‘আমরা শুধু ল্যাবে না, মাঠেও খেলোয়াড়দের দিয়ে পরীক্ষা করেছি। পেশাদার থেকে শুরু করে অপেশাদার—সবার প্রতিক্রিয়া নিয়েছি।’