`এইচএমপিভি’ আক্রান্ত নারীর মৃত্যু

বাংলাদেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত সানজিদা আক্তার (৩০) মারা গেছেন। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার।

ডা. আরিফুল বাশার বলেন, রোগী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা গেছেন। তবে তিনি এইচএমপিভি ভাইরাসের কারণে মারা যাননি। তার অন্য জটিলতা ছিল। তিনি স্থূলতাজনিত সমস্যা, কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ফলে তাকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করা যাচ্ছিল না। তার এক্স-রে ঠিকঠাক ছিল। ফলে ভাইরাল নিউমোনিয়ার জন্য মৃত্যু হয়েছে, এটা মনে হয় না। ১২ জানুয়ারি সানজিদা আক্তারের এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। জানা গেছে, তিনি বিদেশে সফর করেননি এবং তার আক্রান্ত হওয়ার কোনো আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ইতিহাস ছিল না।

ডেথ রিভিউ করার প্রসঙ্গে ডা. আরিফুল বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবেন। আর এইচএমপিভির সংক্রমনের এটা নতুন কোনো ঘটনা না। এই ভাইরাস নিয়ে সাধারণভাবে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও, পার্শ্ববর্তী একাধিক দেশে এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব এবং ভাইরাসটির তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্কতা জারি করেছে।

সম্প্রতি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা জানান, ওই নারী এইচএমপিভিতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানিয়েছিলেন এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় দেশে। এটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই এবং এইচএমপিভি প্রতিরোধ করার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।

এ ভাইরাস নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলা হলেও পার্শ্ববর্তী একাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে সতর্কতাও জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং ভাইরাসের তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনাবি ডিজিজ, গর্ভবর্তী নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।

Comments (0)
Add Comment