জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১৭ শতাংশ উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে যেতে পারে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেলে ৪০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেলজিয়ামের লিজ শহরে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট মোবিলিটিস নেটওয়ার্কের (ইসিএমএন) দ্বিতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জলবায়ু ন্যায়বিচার গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন এবং পরিবেশগত অবনতির জটিল সমস্যা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সংহতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন বহুপাক্ষিকতার জন্য একটি লিটমাস পরীক্ষা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৈশ্বিক কার্বণ নিঃসরণে চেয়ে কম অবদানকারি দেশগুলির একটি, তবুও এটি বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের মহাসচিব ও মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বেলজিয়ামের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং গবেষক ফ্রাঁসোয়া গেমেনের পরিচালনায় প্যানেলে ইতিহাসবিদ এবং লেখক ডেভিড ভ্যান রেইব্রুক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও প্যানেলে আরো ছিলেন স্যান্ড্রিন ডিক্সন-ডেক্লেভ, ক্লাব অব রোমের সহ-সভাপতি এবং আর্থ ৪অল-এর নির্বাহী পরিচালক এবং সেন্ট্রাল ইউরোপের ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্যাটারিনা সেফালভায়োভা।
বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইইউতে মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্যানেলিস্টরা উত্তর দক্ষিণ বিভাজন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও অর্থপূর্ণ পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা, আস্থা পুনর্গঠন এবং একটি ন্যায্য, আরও গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক শাসনের কথা তুলে ধরেন। কপ (COP) আলোচনায় বাংলাদেশের প্রথম সারির ভূমিকা, বিশেষ করে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে প্যানেলিস্টরা প্রশংসা করেন। তারা বৈশ্বিক আর্থিক ও গভর্নিং মেকানিজমের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও কথা বলেন।