ঈদের টানা সরকারি ছুটিকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছে পাহাড়, ঝরনা আর সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সাজেক ভ্যালি, আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, হর্টিকালচার পার্ক ও ঝুলন্ত সেতুসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট এখন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর।
পর্যটন কেন্দ্রগুলো আধুনিকায়নের ফলে পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রকে আধুনিকায়ন, রিছাং ঝরনার সড়ক পিচঢালায় উন্নীতকরণ, জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কে নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন পরিবর্তন করে এগুলোকে আরও আকর্ষণীয় ও নিরাপদ করে তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন মূলত স্থানীয় দর্শনার্থীরাই এসেছিলেন। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই অন্য জেলার পর্যটকদের আগমন শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও বেশি পর্যটক আসবেন।
তিনি আরও জানান, বর্ষাকালে অবিরত বৃষ্টি হলে পর্যটকের সংখ্যা কমে যেতে পারে। এ বছর ঈদের এই কয়দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণই মূলত নির্ধারণ করবে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর চাপ।
খাগড়াছি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার মজুমদার বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের মোটেলের অধিকাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে আগেভাগেই।
সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটনে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। গত এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীর অপহরণ এবং সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে বেশ কিছু হোটেল রেস্তোরাঁ পুড়ে যায়। সেই ঘটনার অতিরঞ্জিত প্রচার পর্যটকদের মাঝে ভুল ধারণা তৈরি করে। এতে দীর্ঘ সময় খাগড়াছড়ি পর্যটকশূন্য অবস্থায় ছিল, যা এবার ঈদের ছুটি ঘিরে কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এদিকে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেক উন্নয়নকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা নির্ভয়ে ও নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।
স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আধুনিকায়নের ফলে খাগড়াছড়ি আবারও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এবার ঈদকে ঘিরে এই খাত ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা তাদের।