মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেনঃ
“তোমরা” তোমাদের পারস্পারিক সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং অধিক স্বরণের মাধ্যমে তোমাদের রবের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করবে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে বেশি করে দান ছদকাহ করবে। যদি তা কর তাহলে তোমাকে রিযিক ও সাহায্য প্রদান করা হবে এবং তোমার ভাগ্য সুন্দর ও সুসজ্জিত করা হবে।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, প্রথম খন্ড, ১০৮১ নং হাদিস)
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ
“হে মু’মিনগণ তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্বরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্থ। (সুতরাং) আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর (আল্লাহর রাস্তায় বেশি বেশি দান কর)।
(সূরা- আল, মুনাফিকুন ৯ ও ১০ এর অংশ বিশেষ)
অতপর যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় (দান) করে, তাদের উপমা- যেমন একটি শস্য বীজ, তা থেকে উৎপন্ন হলো সাতটি শীষ, প্রত্যেকটি শীষে (উৎপন্ন হলো) একশত শস্য দানা। এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন, বস্তুতঃ আল্লাহ মহান দাতা, সর্বজ্ঞ।
(সূরা-আল বাকারাহ্ ২৬১)
আল্লাহর রাস্তায় দান না করে সম্পদ জমাকারীদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ
যারা স্বর্ণ রৌপ্য (অর্থ-সম্পদ) জমা করে অথচ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না (যাকাত আদায় করে না) তাদেরকে কষ্টদায়ক আযাবের সংবাদ দিন। যে দিন তা (যাকাত বিহীন জমাকৃত সম্পদ) গরম করা হবে জাহান্নামের আগুনে এবং তার দ্বারা তাদের ললাটে, প্বার্শে ও পৃষ্ঠদেশে দগ্ধ করা হবে। এটা তা-ই যা তোমরা জমা করতে নিজেদের জন্য । আযাবের স্বাদ গ্রহন কর যা জমা করে রেখেছিলে।
(সূরা- তওবা, ২৪ ও ২৫)।
যাকাত এবং সকল প্রকার দানের উপযুক্ত খাত সমূহঃ
মহাগ্রন্থ আলকুরআনের সূরা তওবায় (৬০ নং আয়াত) আল্লাহ বলেন, সাদাকাত বা যাকাত কেবল-
(১) ফকীর (সহায় সম্বলহীন গরীব যারা অন্যের ধারস্থ)
(২) মিসকীন (যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সকল মানুষের কল্যাণে আল্লাহর নির্শিত ও তাঁরই রাসূল (সাঃ) প্রর্শিত পদ্ধতিতে দ্বীন কায়েমের কাজে নিয়োজিত কিন্তু অভাবগ্রস্থ থাকা সত্যেও তারা কারো কাছে হাত পাতে না, বা করুনা চাহে না)
(৩) যাকাত বিভাগে কর্মরত কর্মচারীদের (একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে নেতৃত্বদানকারী নেতার পরিচালনায়-যাকাতের অর্থ আদায়, সংরক্ষন ও যথাপযুক্ত খাতে বন্টন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের) প্রয়োজনীয় বেতন ভাতা প্রদান।
(৪) মুয়াল্লাফাতে কুলুব (যাদের মন জয় করা আবশ্যক)
(৫) দাস মুক্ত করার জন্য।
(৬) ঋণ পরিশোধ (ঋণগ্রস্থদের ঋণ পরিশোধে)
(৭) আল্লাহর রাস্তায় (জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণে আল্লাহর নির্দেশিত এবং তাঁরই রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েমের-খেলাফত কায়েমের চূড়ান্ত প্রচেষ্ঠার আন্দোলনে) ব্যায় করা।
(৮) মুসাফির (যে সফরে গিয়ে অভাবে পতিত হয়েছে)।