ফিলিস্তিনের গাজায় নৃশংসতার দায়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পাকিস্তানি স্থপতি ও সংরক্ষণবিদ ইয়াসমিন লারি এ বছরের উলফ পুরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন।
১৯৭৮ সালে ইসরায়েলে প্রবর্তিত এই পুরস্কার প্রতিবছর বিজ্ঞানী ও শিল্পীদের অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয়। এর লক্ষ্য ‘(বিভিন্ন জাতির) মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ গঠন।
ইয়াসমিন লারি ডনকে বলেন, আমাকে এটা করতেই হতো। আমার কোনো বিকল্প ছিল না। আমাকে করতেই হতো। নাহলে আমরা আর কী করতে পারি? আমাদের হাত বাঁধা। আমরা এখানে বসে আছি… ওদের (মধ্যপ্রাচ্যের মানুষদের) থেকে অনেক, অনেক দূরে। তাই আমি মনে করি, একজনকে অবশ্যই জানাতে হবে তার অবস্থান কোথায়। ‘আমি গরিবদের জন্য কাজ করি।
স্থাপত্য ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন ইয়াসমিন লারি। তিনি পাকিস্তানে নিবন্ধিত প্রথম নারী স্থপতি।
অসামান্য সব ডিজাইনের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে তার প্রচেষ্টাও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
ইয়াসমিন লারি কয়েক বছর আগে সিন্ধুর বন্যাকবলিত মানুষের জন্য হাজারো স্বল্প খরচের এক কক্ষবিশিষ্ট ঘর নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন।
ইয়াসমিন লারি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০২৩ সালের রয়্যাল গোল্ড মেডেল ফর আর্কিটেকচার। এই পুরস্কারটি ব্রিটেনের রাজা রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টসের সুপারিশে দিয়ে থাকেন। এছাড়া, তিনি ২০২০ সালে জেন ড্রু পুরস্কারও জয় করেছেন।
করাচির ঐতিহ্য সংরক্ষণে ইয়াসমিন লারির অবদান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। ১৯৯৬ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তার বই ‘দ্য ডুয়াল সিটি: করাচি ডিউরিং দ্য রাজ’। এই বইতে তিনি করাচির ঔপনিবেশিক ইতিহাস, স্থাপত্য ও মানুষ নিয়ে লিখেছেন।
তিনি ছিলেন প্রথমদিকের সংরক্ষণবিদদের একজন, যিনি সমুদ্রতীরবর্তী এই শহরের উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক গুরুত্বের প্রতি ইতিহাসপ্রেমী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।