ইসরাইলের সংসদ মুলতুবি হয়ে গেছে।আগামী ১ নভেম্বর দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে চার বছরে এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনের পথে হাঁটতে চলেছে ইহুদি রাষ্ট্রটি। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৫৮ বছর বয়সী ইয়ার ল্যাপিড এই পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব সামলাবেন। তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের বর্তমান জোট সরকার গঠনের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন এই ল্যাপিড। আর, সে কারণে ল্যাপিডের ওপরই ভরসা রাখছেন তার সহকর্মীরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর দিয়ে জানায়- ল্যাপিডকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী বানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে বৃহস্পতিবার ইসরাইলি সংসদ মুলতুবি ঘোষণা করা হয়। কারণ, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট অবসর নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
বিরোধীদের মতে, কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে না-পেরেই বেনেট সরে যাচ্ছেন। কারণ, প্রতিনিয়ত দেশের নিরাপত্তা নিয়ে তার ওপর চাপ বাড়ছিল। তাদের অভিযোগ- ইসরাইলের নাগরিকদের ওপর নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা, প্রার্থনার সময়ও গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে ইসরাইলিদের ওপর। এসবের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সমর্থকরা।
এছাড়াওল, পররাষ্ট্রনীতিতেও চূড়ান্ত ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে বেনেট সরকারের বিরুদ্ধে। আল-জাজিরার সাংবাদিক হত্যার অভিযোগে ইসরাইলকে দোষী সাব্যস্ত করেছে জাতিসংঘ। ইহুদি রাষ্ট্রটির পাশে দাঁড়ায়নি দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও। যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু আরব দেশগুলোতে বেনেটের জমানায় ইসরাইল প্রভাব বাড়ালেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি ইরানকে। উল্টো, ইরানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। যার ফলে, রাশিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কে চিড় ধরেছে।
সবমিলিয়ে, ইসরাইলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নিতে চলেছেন ইয়ার ল্যাপিড। যে ল্যাপিডের বিরুদ্ধে পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে, তার ঘাড়েই আপাতত চাপতে চলেছে ইসরাইল চালানোর ভার। নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর ল্যাপিড হলেন ইসরাইলের ১৪ তম প্রধানমন্ত্রী। আর, তার পূর্বসূরি বেনেট দেশটির সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে দীর্ঘ ১২ বছর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কমান্ডো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাকে সরিয়ে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ই নেতানিয়াহুর সমর্থকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ভিন্ন মতাদর্শের দলকে নিয়ে জোট গড়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না বেনেট।