প্রতিবাদ বিক্ষোভে সমর্থন দেয়ায় ইরানে অস্কার বিজয়ী ছবি ‘দ্য সেলসম্যান’-এর অভিনেত্রী তারানেহ আলিদোস্তি’কে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় বলা হয়েছে, শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতে মারা যান কুর্দি যুবতী জিনা মাহশা আমিনি। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইরান। প্রতিবাদের এই ঢেউ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে। এমনকি বিশ্বকাপ ফুটবলকেও স্পর্শ করেছে। এতে সমর্থন দিয়ে নিজের ইন্সটাগ্রামে বেশ কিছু পোস্ট দিয়েছিলেন আলিদোস্তি। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা বলেছে, দেশজুড়ে অস্থিরতায় জড়িত থাকার কারণে এরই মধ্যে ইরানে এক যুবককে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এরপর ইন্সটাগ্রামে সংহতি জানিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন অভিনেত্রী আলিদোস্তি। তার পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওই যুবক সম্পর্কে আলিদোস্তি লিখেছেন, তার নাম মোহসেন শেকারি। এই রক্তপাত যেসব আন্তর্জাতিক সংগঠন দেখছে এবং কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাদের সবার জন্য এটা মানবাধিকার অবমাননার, নিন্দার।
এই পোস্ট দেয়ার পর গত রোববার থেকেই আলিদোস্তির একাউন্ট সাসপেন্ড করে দেয়া হয়। অভিযোগের পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি এমন অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারপন্থি বার্তা সংস্থা তাসনিম বলেছে, মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেয়া এবং পাল্টা বিপ্লবীদের সমর্থন দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। এর আগে হেডস্কার্ফ সরিয়ে ফেলার জন্য একজন নারীকে অবমাননা করা হয়েছিল। টুইটারে তার সমালোচনা করেছিলেন তিনি। এ কারণে ২০২০ সালে তাকে ৫ মাসের জেল দেয়া হয়।
মাহশা আমিনি ‘হত্যা’র প্রতিবাদ বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য প্রথম যে ব্যক্তিকে ইরান ফাঁসি দিয়েছে তিনি হলেন শেকারি। তাকে ৯ই ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অভিযোগ বিক্ষোভের সময় চাপাতি হাতে তিনি নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্যকে আক্রমণ করেছিলেন।
বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সপ্তাহে মাজিদরেজা রাহনাভার্ড নামে আর একজনের ফাঁসি কার্যকর করেছে ইরান। কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, তিনি আধাসামরিক বাহিনীর দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাত করেছেন। ফলে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইরানে দু’জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো। শুক্রবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ঘোষণা দেয় যে, ২৬ জন বিক্ষোভকারী মৃত্যুদণ্ডের মুখে আছেন। তাদের ১১ জনকে এরই মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।