ইফতার: শরবত তৈরির উপকরণ এখন ‘বিলাসী পণ্য’

রমজান মাসে ইফতারের সময় তৃষ্ণা মেটাতে বিভিন্ন পানীয়ের চাহিদা বেড়ে যায়। বর্তমানে ইফতারে পানীয় পরিবেশন এক ধরনের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ঊর্ধ্বগতির বাজারে ইফতারে পানীয় তৃষ্ণা মেটানোর উপকরণ এখন ‘বিলাসী পণ্য’।

বিক্রেতারা বলছেন, মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন কারণে দেশি-বিদেশি ব্রান্ডের শরবত তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে। এর ফলে আগের চেয়ে এসব উপকরণ বিক্রি অনেক কমে গেছে।

ভোক্তারা জানিয়েছেন, না কিনলেই নয় এমন হিসেব করেই শরবত তৈরির উপকরণ কিনছেন তারা।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে দেখে গেছে, দোকানগুলোতে বিভিন্ন ব্রান্ডের শরবত তৈরির উপকরণ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—ট্যাং, রুহ আফজা, ফস্টার ক্লার্ক, গ্লুকোজ, ফ্রুট স্যালাইন, ইসবগুল ও দেশি-বিদেশি কোম্পানির ফলের জুস। বিভিন্ন স্বাদযুক্ত শরবতের পাউডার ১-২ কেজি, ৮৪০, ৫০০, ৪৮০ ও ২৭০ গ্রামের কৌটা ও বয়ামে বিক্রি হচ্ছে।

ডলার সংকটসহ নানান কারণে বিদেশি পণ্যের দাম একটু বেড়েছে। এবার দেশি শরবতের উপকরণগুলোও কম বিক্রি হচ্ছে। রোজা কেন্দ্র করে বেশি বিক্রি হচ্ছে না। এবার সাধারণ ক্রেতারা খুব হিসেব করে কেনাকাটা করছেন। একান্ত যে জিনিস লাগবে না সেটি কিনছেন না। আবার যে জিনিস না কিনলে চলবে না ঠিক সেগুলোই কিনছেন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম।

এসব উপকরণের মধ্যে, বিদেশি ব্রান্ডের ফস্টার ক্লার্ক ২ কেজি ওজনের ফ্যামিলি প্যাকের দাম ১ হাজার ৫৬০ টাকা। এছাড়া ৯০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের মধ্যেও মিলছে শরবত তৈরির এ উপকরণটি।

এছাড়া বিদেশি পণ্যের মধ্যে রয়েছে নিউট্রি-সি ও ট্যাং। নিউট্রি-সি ওজন অনুযায়ী ৩০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ট্যাং ওজন অনুযায়ী ৩০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশীয় প্রতিষ্ঠান হামদর্দ ফুড প্রোডাক্টের পানীয় রুহ আফজা ৩০০ মিলি ৩০০ টাকা, ৭৫০ মিলি ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইসবগুলের খোলা ভুসি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায় এবং প্যাকেটজাত ইসবগুলের ভুসি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রমজান মাসের আগেই শরবত তৈরির উপকরণগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে বিদেশি ব্রান্ডের বিভিন্ন শরবতের পাউডারগুলোর দাম বেশি বেড়েছে।

দেশীয় কোম্পানির শরবতের পাউডারের দাম আগে কম ছিল এখন অনেক বেশি। বাড়তি দামের কারণে ইফতারে শরবতের বহুপদের বদলে এক পদেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এছাড়া লেবুর শরবত এর বিকল্প হতে পারে।

নিউমার্কেটের সিটি জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী নুরুন্নবী বলেন, দাম গত বছরের তুলনায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মতো বেড়েছে। সেজন্য বিক্রি অন্য সময়ের তুলনায় অনেক কমে গেছে। অন্য বছর রমজানের আগে যে পরিমাণ বিক্রি হতো এবার তার চেয়ে অনেক কম বিক্রি হয়েছে।

রবিউল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ডলার সংকটসহ নানান কারণে বিদেশি পণ্যের দাম একটু বেড়েছে। এবার দেশি শরবতের উপকরণগুলোও কম বিক্রি হচ্ছে। রোজা কেন্দ্র করে বেশি বিক্রি হচ্ছে না। এবার সাধারণ ক্রেতারা খুব হিসেব করে কেনাকাটা করছেন। একান্ত যে জিনিস লাগবে না সেটি কিনছেন না। আবার যে জিনিস না কিনলে চলবে না ঠিক সেগুলোই কিনছেন।

ক্রেতারা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের চড়া দামে সংকুচিত হয়েছে বাজারের লিস্ট। রোজাকে কেন্দ্র করে সব কিছুর বাড়তি দামে নাকাল হতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে একান্ত প্রয়োজনকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

নুরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, দেশীয় কোম্পানির শরবতের পাউডারের দাম আগে কম ছিল এখন অনেক বেশি। বাড়তি দামের কারণে ইফতারে শরবতের বহুপদের বদলে এক পদেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এছাড়া লেবুর শরবত এর বিকল্প হতে পারে।

বর্তমানে প্রতি হালি লেবু ৪০-১২০ টাকা, এছাড়া ডাব ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যাদের উচ্চ দামে শরবত উপকরণ কেনার সাধ্য নেই তাদের ভরসা লেবুর পানি। এছাড়াও রোজার মাসজুড়ে লেবু ও ডাবের চাহিদা বেশি থাকে।

Comments (0)
Add Comment