শ্বাসরূদ্ধকর এক ফাইনাল দেখলেন বিপিএল দর্শকরা। লক্ষ্য ছিল ১৯৫ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। বোলার ছিলেন হোসাইন তালাত। উইকেটে ছিলেন রিশাদ হোসেন আর এবাদত হোসেন। প্রথম বলেই লং অনের ওপর দিয়ে সোজা ছক্কা মেরে দিলেন রিশাদ হোসেন। পরের বলে একটি সিঙ্গেল এবং একটি ওয়াইড। তিন বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিলো ফরচুন বরিশাল। টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো তামিম ইকবালের দল।
২০১৭ সালে বিপিএলে ফাইনালে ২০৬ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স। ঢাকা ক্যাপিটালস ওই রানের ধারে কাছে যেতে পারেনি। ২০১৯ এর আসরে ১৯৯ রান করে ১৭ রানে জিতেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবার তাই জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ফরচুন বরিশালের। তাড়া করতে হতো রেকর্ড ১৯৫ রান। শেষ পর্যন্ত ৩ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে ওই রান তুলে ফেলে বরিশাল।
শুক্রবাার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে চিটাগং কিংস। ওপেনিং জুটিতে ১২.৪ ওভারে ১২১ রান তোলে তারা। ওই জুটির ওপর ভিত্তি করে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। জবাবে বরিশালও ওপেনিং জুটিতে ৮.১ ওভারে ৭৬ রান যোগ করে। তামিম ও হৃদয়ের দেওয়া ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে কাইল মায়ার্স ও রিশাদ হোসেন বরিশালকে জয় এনে দিয়েছেন।
চিটাগং কিংসের হয়ে ২২ বছর বয়সী পাকিস্তানি ওপেনার খাজা নাফি ৪৪ বলে ৬৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। টুর্নামেন্টের তৃতীয় ফিফটির পথে তার ব্যাট থেকে সাতটি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কার শট আসে। বিপিএলের শুরুতে ব্যাট হাতে ভালো করতে না পেরে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের তোপে পড়া ওপেনার পারভেজ ইমন ৪৯ বলে হার না মানা ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন। তিনি ছয়টি চার ও চারটি ছক্কা হাঁকান। এছাড়া গ্রাহাম ক্লার্কের ব্যাট থেকে ২৩ বলে ৪৪ রান আসে। তিনটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন তিনি।
বরিশালের হয়ে ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ২৯ বলে ৫৪ রান যোগ করেন। শুরু থেকে ঝড়ো ব্যাটিং করা এই অভিজ্ঞ ব্যাটার নয়টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা তোলেন। টুর্নামেন্টে তামিম তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৬৭ রান করেছেন। তার ওপরে আছেন কেবল নাঈম শেখ (৫১১) ও তানজিদ তামিম (৪৮৫)। তার সঙ্গে জুটি গড়া ওপেনার হৃদয় ২৮ বলে তিন চারের শটে ৩২ রান করেন।
বরিশালকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন কাইল মায়ার্স। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ওই জুটিতে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে বরিশাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার মায়ার্স ২৮ বলে ৪৬ রান করেন। তিনটি করে চার ও ছক্কা তোলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে ৭ রান করলেও ৬ বলে দুই ছক্কায় ১৮ রান করেন রিশাদ হোসেন।
চিটাগং কিংস ম্যাচ হেরেছে দুই ইনিংসেরই শেষ ৫ ওভারে। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শুরু পেয়েও শেষ ৪ ওভারে তারা মাত্র ৩১ রান নিতে পারে তারা। একইভাবে বল হাতে শেষ ৫ ওভারে রান তো চিটাগং আটকাতেই পারেনি বরং একাধিক ফিল্ডিং মিস করেছে। এর মধ্যে ১৬তম ওভারেই দুই চার ছেড়েছে তারা। ১৮তম ওভারে ফিল্ডিং মিসে রান দিয়েছে তারা। শেষ ২ ওভারে ২০ রান তাই আটকে পারেনি চিটাগং।