কৃমিকে আমরা যতই ছোটখাটো সমস্যা ভাবি না কেন, এটা কিন্তু অনেক ভয়ংকর এক জিনিস। আমরা প্রতিদিন যে পুষ্টি পাচ্ছি, তার ৩ ভাগের ১ ভাগই নিয়ে নিচ্ছে কৃমি। শুধু তাই নয়, কৃমি রক্তশূন্যতাও সৃষ্টি করে। অনেক সময় অনেকের অন্ত্র ব্লক হয়ে যায়, তখন পেট কেটে কৃমি বের করতে হয়। কৃমি হতে জন্ডিস হতে পারে।
প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা নীচের পয়েন্টগুলো ছড়িয়ে দিন এবং নিজ নিজ এলাকাসহ অন্যান্য স্থান কৃমিমুক্ত করুনঃ
১. পেশাব-পায়খানার পর বাম হাত লিকুইড সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। তারপর ডান হাতও ভাল করে ধুয়ে নিন।
২. ভাত, রুটি, মুড়ি এমনকি একটা বিস্কুট খেতে হলেও ডান হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। এটা খুব জরুরী।
৩. নখ কেটে ছোট রাখবেন।
৪. সবজি এবং ফল খুব ভাল করে ধুয়ে খাবেন।
৫. কাঁচা মাটিতে খালি পায়ে হাঁটবেন না। এতে এক ধরনের কৃমি পায়ের চামড়া ভেদ করে ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। পায়খানা এবং গোসলখানায়ও পরিস্কার স্যান্ডেল পরে যাবেন।
৬. কৃমির ওষুধ ৩ মাস পরপর খাবেন, কৃমি থাক আর না-ই থাক। ভাল কোম্পানির ওষুধ ১ টা চুষে খাবেন (রাতে খাওয়ার পরপর, স্থির অবস্থায়)।
৭. এই ৩ মাসের মাঝে কৃমি হলে সাথে সাথে আরেকটা ওষুধ চুষে খেয়ে ফেলবেন।
৮. বিশুদ্ধ পানি খাবেন।
৯. পায়খানা খুব পরিস্কার রাখবেন।
বিঃ দ্রঃ গর্ভবতী মহিলারা কৃমির ওষুধ খেতে পারবেন না। একান্ত দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেনার আগে ওষুধের মেয়াদ আছে কিনা দেখে নিন। ওষুধ রোদ-তাপ হতে দূরে রাখুন। নিজেরাও স্থির অবস্হায় একটু ঠান্ডা হয়ে বসে কৃমির ওষুধ খাবেন। ৩ বছরের কম বয়সি শিশুদের কৃমি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ান। গৃহকর্মির পরিচ্ছন্নতার দিকে খুব লক্ষ্য রাখুন এবং তাকেও কৃমি প্রতিরোধের উপায়গুলো সম্পর্কে জানান।
মনে রাখবেন, আমাদের জনগণের অপুষ্টির মূল কারণ এই কৃমি।
তাই বিনীত নিবেদন, আসুন যে যার অবস্থান থেকে কৃমির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি, কৃমিমুক্ত সুস্থ জাতি গঠনে ভূমিকা নিই।
লিখেছেন ডাঃ নাহিদ ফারজানা।
প্রাক্তন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।