আসাদবিরোধীরা দামেস্কের পথে, সিরিয়া থেকে সামরিক কর্মকর্তাদের সরাচ্ছে ইরান

উত্তর-দক্ষিণ থেকে শহর দখল করতে করতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দিকে এগুচ্ছে ক্ষমতাসীন বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধীরা। দক্ষিণে দারা ও উত্তরে হামার পর গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর দখলের চেষ্টা করছে বিদ্রোহীরা। আসাদের সম্ভাব্য পতন আশঙ্কা করে সিরিয়া থেকে সামরিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিচ্ছে দেশটির আঞ্চলিক সহযোগী ইরান। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা, সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর দারাতেই ২০১১ সালের আসাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। শুক্রবার রাতে বিবৃতিতে স্থানীয় বিদ্রোহীরা জানান, তাদের বাহিনী দারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আশেপাশে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। সেখানকার বড় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিসগুলো দখলে নেওয়া হচ্ছে।

দক্ষিণে আলেপ্পো, হামার পর হোমস ঘিরে রাখা সশস্ত্র সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও উত্তর থেকে আক্রমণ শুরু করা বিদ্রোহীরা একই গোষ্ঠী নয়। তবে তাদের সবাই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তা পাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

এদিকে সিরিয়ায় বাশার সরকারকে সহযোগিতা করতে আসা সামরিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ইরান। কুদস ফোর্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা সিরিয়া থেকে প্রতিবেশী ইরাক ও লেবাননে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জেরে ২০১১ সালে সিরিয়ায় আসাদবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর থেকে আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের সবচেয়ে বড় মিত্র শিয়াপন্থি বাশার আল আসাদ। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, এতদিন সিরিয়ার স্থলপথ দিয়েই হিজবুল্লাহর কাছে ইরানের অস্ত্র পৌঁছাতো।

সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর এই দুর্দশার মধ্যে দেশের পূর্বাঞ্চলে হামলা শুরু করেছে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট কুর্দি বিদ্রোহীরাও। পূর্বাঞ্চলের শহর দেইর আল-জোর দখলের চেষ্টা করছে তারা। পূর্বাঞ্চলের কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলের একটি বড় অংশ কুর্দি স্বাধীনতাকামীদের দখলে।

সিরিয়ায় সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী জর্ডান ও লেবানন। গতকাল বৈরুত-দামেস্ক সংযোগ সড়ক ছাড়া সিরিয়া সীমান্তের সব স্থলবন্দর বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে লেবানন। শুক্রবার জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঘোষণা দিয়েছেন, সিরিয়া সীমান্তে সব ধরনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।