ফিলিস্তিনিদের প্রতি পবিত্র রমজান মাসে দখলকৃত জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে গিয়ে ইবাদত, দৃঢ় অবস্থান ও ইতেকাফে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
সংগঠনটি বলছে, এটি শুধু ধর্মীয় আনুগত্যের প্রতীক নয়, বরং দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধেরও অংশ। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
এক বিবৃতিতে হামাস পশ্চিম তীর, জেরুজালেম এবং ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘এই মাসে আল-আকসা মসজিদে গিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালান, সেখানে দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখুন এবং ইতেকাফ করুন।’
হামাস আরও বলেছে, ‘রমজানের বরকতময় দিন ও রাতগুলো ইবাদত, দৃঢ় অবস্থান এবং শত্রু ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে উৎসর্গ করুন, পাশাপাশি জেরুজালেম ও আল-আকসার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করুন যতক্ষণ না তা দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হয়।’
বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হামাস বলেছে, আপনারা গাজা, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশে ব্যাপক কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আল-আকসা মসজিদের খতিব শেখ ইকরিমা সাবরি বলেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার অজুহাতে জেরুজালেমে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে তিনি দাবি করেন, এর প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনিদের আল-আকসায় প্রবেশ সীমিত করা।
প্রতিবছর রমজান মাসে ইসরায়েল এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে।
ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, এই বিধিনিষেধ পূর্ব জেরুজালেমসহ আল-আকসা মসজিদকে ইহুদিকরণ এবং এর আরব ও ইসলামি পরিচয় মুছে ফেলার বৃহত্তর ইসরায়েলি নীতির অংশ।
আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা। অন্যদিকে, ইহুদিরা এই স্থানকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে অভিহিত করে এবং দাবি করে, সেখানে প্রাচীনকালে দুটি ইহুদি মন্দির ছিল।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম দখল করে এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটি সংযুক্ত করার ঘোষণা দেয়, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনো স্বীকৃতি দেয়নি।
গত বছরের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের দখলদারিত্ব অবৈধ এবং পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমে সব বসতি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।