মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো ভারতের তৈরি করোনাভাইরাসরোধী টিকা কোভ্যাক্সিনের। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন আলফা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকরী। অর্থাৎ এই টিকা নিলে কোভিডের নতুন শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট থেকেও সুরক্ষিত থাকা সম্ভব বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেকের জন্যই যে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন কার্যকরী তা সর্বশেষ ট্রায়ালের পর নিশ্চিত করা হয়েছিল। তৃতীয় ট্রায়ালের পর জানানো হয়েছিল যে, উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ৭৮ শতাংশ এবং মুমূর্ষু রোগীদের জন্য শতভাগ শতাংশ কার্যকরী এই ভ্যাকসিন।
অন্যদিকে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ কার্যকরী এই ভ্যাকসিন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হেল্থ ইনস্টিটিউশন নিশ্চিত করেছে যে, এই ভ্যাকসিন নিলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা অনায়াসেই বি.১.১.৭(আলফা) এবং বি.১.৬১৭(ডেল্টা) ভ্যারিয়েন্টকে অকার্যকর করতে সক্ষম।
কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের রক্ত পরীক্ষা করে এর প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হেল্থ ইনস্টিটিউশনের গবেষকরা। যা নিঃসন্দেহে দেশবাসীর কাছে স্বস্তির খবর। এখনও পর্যন্ত মোট আড়াই কোটি মানুষ এই ভ্যাকসিন পেয়েছেন। গবেষকদের দাবি, আরও বেশি পরিমাণ কোভ্যাক্সিন দেওয়া গেলে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
তবে এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, ভারত বায়োটেকের সঙ্গে ৩২৪ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল করেছে ব্রাজিল। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংস্থাটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হচ্ছে, কোভ্যাক্সিনের দু’কোটি ডোজ কেনার কথা থাকলেও দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর কারণেই আপাতত চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি আরও বিস্তারিত খতিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কোভ্যাক্সিনের দুই কোটি ডোজ কিনতে ৩২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের চুক্তি করেছিল ব্রাজিল সরকার। তবে সেই চুক্তি করতে ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জেরেই ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা টিকা কেনার চুক্তি আপাতত স্থগিত করেছে ব্রাজিল।