আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ন্যায়বিচারের আকুতি জানিয়েছেন সাবেক শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেছেন, আর কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবেন না। সোমবার (৩ মার্চ) সকালে কাফরুল থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।
আদালতে তোলার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কামাল আহমেদ মজুমদার বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার বয়স ৭৬ বছর, আমি ডায়াবেটিসের রোগী, আমার চোখের ৭০ শতাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। পরিবার থেকে কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না, তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবো না। আমি কোনো পদে নেই, প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও পদত্যাগ করেছি।’
কামাল আরও বলেন, ‘আপনার (বিচারক) কাছে আমার আবেদন, সুবিচার চাই। একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। আমি এখন নাতি-নাতনিদের সঙ্গে খেলার সময় চাই, কিন্তু জেলখানায় অত্যাচার করা হচ্ছে। আল্লাহকে ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডিজিটাল কুরআন, ডায়াবেটিসের ওষুধ ও মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না।’
এরপর মামলার আসামিদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। কাফরুল থানার হত্যা মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। অন্য গ্রেপ্তারি আদেশপ্রাপ্তরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, এবং অপর সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক।
আদালতের নির্দেশে, কামাল আহমেদ মজুমদারসহ অন্য আসামিদের সিএমএম আদালতের হাজতখানায় পাঠানো হয়। কাঠগড়া থেকে নামার পর কামাল আহমেদ মজুমদার সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘আমি রাজনীতি থেকে একেবারে অব্যাহতি নিচ্ছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।’
গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে তাকে বিভিন্ন হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।