বছর দুয়েক আগে মিউনিকের একটি সম্মেলনে সাধারণ নাগরিক হিসেবে অংশ নিয়ে জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ‘আমেরিকা ফিরে আসবে’। দৃঢ়চিত্ত সেই ঘোষণায় তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। সেই সম্মেলনে আবারও অংশ নিয়েছেন বাইডেন। তবে এবার সাধারণ নাগরিক নয়, প্রবেশ করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে। আর ফিরেই দু’বছর আগের সেই কথা মনে করিয়ে বললেন, ‘আমেরিকা ফিরে এসেছে।’
শুক্রবার মিউনিক নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। করোনাভাইরাসের কারণে এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ভার্চ্যুয়ালি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপীয় মিত্রদের সম্পর্কের টানাপোড়েন অধ্যায়ের সমাপ্তি টানার ইঙ্গিত দিয়ে সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা দেন, ‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’ (আমেরিকা ফিরে এসেছে), ‘ট্রান্সআটলান্টিক জোট ফিরে এসেছে’।
এদিন মার্কিন প্রশাসনের সম্ভাব্য করণীয় বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে ফেরা, চীন-রাশিয়ার তৈরি অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা দরকার বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বক্তৃতায় একবারও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে বাইডেন তার পূর্বসূরীর ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি বাদ দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক জোট আবারও চাঙ্গা করে তোলার কথা বলেন, যা পশ্চিমারা বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করে।
বাইডেন বলেন, আমি জানি, গত কয়েক বছর চাপ ছিল এবং ট্রান্সঅ্যাটল্যান্টিক সম্পর্কের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের সঙ্গে ফের যুক্ত হতে, আপনাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে, বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে আমাদের অবস্থান ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭-এর একটি ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনেও অংশ নেন জো বাইডেন। সেখানেও ছিল মিউনিক সম্মেলনের রেশ।
বাইডেনের কথার সুর ধরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল বলেন, ‘আমেরিকা, ফিরে আসায় স্বাগতম’।
এসময় জোটের নেতারা করোনাভাইরাসকে পরাজিত করে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রতি দেন।
সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, ডয়েচে ভেলে