কণ্ঠশিল্পী আকবরের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি ঘটছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা সীমা। তিনি জানান, গত সোমবার শারীরিক সমস্যা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আকবরকে। সীমা বলেন, ‘এখনও অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না, বরঞ্চ ইসিজি রিপোর্ট খারাপ আসছে।’
ডায়াবেটিস ও কিডনিরোগসহ বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত কণ্ঠশিল্পী আকবরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত সোমবার। ঈদুল আজহার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কোমর থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত অবশ হয়ে আছে। মেডিসিন বিভাগের ডা. সুনীল কুমার বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে।
সীমা বলেন, গত রবিবার হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে আসি। করোনা পরীক্ষার পরে সোমবার ভর্তি করানো হয়। উন্নতির কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না, বরঞ্চ শরীর আরো খারাপ হচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু ভেবে পাচ্ছি না আমাদের করণীয় কী? উনি (আকবর) ঈদের আগে থেকেই হাঁটতে পারছিলেন না। ধীরে ধীরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। এরপর তো হাসপাতালে নিয়ে এলাম।
মিডিয়া সংশ্লিষ্ট কিংবা কেউ সহযোগিতা করেছেন কি না এ প্রশ্নের জবাবে সীমা বলেন, হানিফ সংকেত স্যার সব সময়ই খোঁজ নিচ্ছেন। এছাড়াও ডিপজল ভাই, জায়েদ খান ভাইয়ের মাধ্যমে খোঁজ খবর রাখছেন। জায়েদ খান ভাই ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন, যোগাযোগ করছেন। বলা যায় উনিই এই সময় পাশে রয়েছেন।
কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আগে থেকেই আকবর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এখন বেড়েছে। কিডনিতে সমস্যা রয়েছে। ইলেকট্রোলাইট নেমে গেছে। পায়ের রোগ বেড়েছে, কোনোভাবেই পা কাজ করছে না। সাড়ে তিন বছর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি।’
এদিকে রাজধানীর মিরপুরের হারমান মেইনার স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া আকবরের মেয়ে অথই ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার আব্বুর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ডাক্তার বলেছে যেকোনও সময় যা কিছু হয়ে যেতে পারে। সবাই আব্বুর জন্য বেশি বেশি দোয়া করবেন। আমরা যেন আব্বুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি। আব্বু খুব কষ্ট পাচ্ছে। আল্লাহ তুমি আমার আব্বুর কষ্ট একটু কমিয়ে দাও। আব্বুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দাও। আমিন।’
যশোর শহরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। সেখানে টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের একজন আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’-কিশোর কুমারের এই গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।
পরিবার নিয়ে আকবর মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকেন। তাঁর বড় মেয়ে আছিয়া আকবর অথই হারমান মেইনার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে কামরুল ইসলাম ও মহরম থাকে গ্রামের বাড়ি যশোরে।