আদালতের আদেশ অমান্য করায় অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুরশেদুল কবীর এবং ব্যাংকটির পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে তিন মাসের বিনাশ্রমের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ের কপি পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের একক বেঞ্চ গত মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
এমডি ছাড়া কারাদণ্ড পাওয়া অপর চার কর্মকর্তা হলেন- দুইজন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ সাহা ও ওয়াহিদা বেগম এবং প্রিন্সিপাল শাখার জিএম মো. ফজলুল করিম ও এলপিআরে যাওয়া আরেক জিএম এ কে এম ফজলুল হক।
আবেদনকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল আমীন বুধবার রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে বুধবার আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইনজীবী শামীম খালেদ। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
আইনজীবীরা জানান, ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুন গ্রুপের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের ডিক্রি মূলে পাওনা ৫৩৯ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে পাওনার ২৫ শতাংশ কিস্তিতে পরিশোধের জন্য মুন গ্রুপের কাছে চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ না করলে মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে পাঠানো হবে।
ব্যাংকের এই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে ঘোষণামূলে ডিক্রি প্রার্থনা করা হয়। একইসঙ্গে ব্যাংকের চিঠির বিরুদ্ধে আদেশ প্রার্থনা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। নিম্ন আদালত এই আদেশ নামঞ্জুর করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে মুন গ্রুপ হাইকোর্টে বিবিধ আপিল দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ব্যাংকের চিঠির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। পাশাপাশি রুল দেন।
এদিকে নির্ধারিত সময়ে ঋণের ২৫ শতাংশ কিস্তি পরিশোধ না করায় মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে সিআইবি পাঠায় অগ্রণী ব্যাংক। পরে মুন গ্রুপ অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ চার নির্বাহীর বিরুদ্ধে ভায়োলেশন মোকাদ্দমা দায়ের করে। মামলার শুনানি শেষে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি, ডিএমডিসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে ৩ মাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।