হজ নিয়ে আশার আলো

ভয়াবহ করোনাভাইরাসের কারণে এবছর পবিত্র হজ অনুষ্ঠান নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কেটে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করে দুই মাসেরও বেশি সময় পর সৌদি আরবের মসজিদগুলো খুলে দেয়ায় হজ নিয়ে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ১৫ জুনের মধ্যে দেশটির সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ।

বার্তা সংস্থা রয়টাস জানায়, রবিবার থেকে সৌদি আরবে পবিত্র কা’বা শরীফ ও মসজিদুন নববীসহ সব মসজিদের দ্বার নামাজ পড়ুয়াদের জন্য ফের উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আসন্ন হজ পালনের দ্বার খুলতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের হজ সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ সোমবার বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে পবিত্র হজের কেন্দ্রবিন্দু সৌদি আরবের পবিত্র কা’বা এবং মসজিদুন নববী সাধারণ মুসুল্লীদের জন্য বন্ধ রেখেছিল সৌদি সরকার। দুই মাসের বেশি সময় পর রোববার তা আবার সীমিত আকারে খুলে দিয়েছে বলে জেনেছি। আমরাও আসন্ন হজের জন্য নিবন্ধনসহ সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি।

তিনি বলেন, এ বছর বাংলাদেশসহ বর্হিবিশ্বের হজযাত্রীরা হজ পালন করতে পারবে কিনা তা নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। সব বিষয় বিবেচনা করে সে সিদ্ধান্ত নেবে সৌদি সরকার। আমরা আসা করছি এ ব্যাপারে তারা আগামি ১৫ জুনের মধ্যে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। তাদের সিদ্ধান্ত পাওয়া মাত্রই বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করবে।

এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজার যাত্রী চলতি বছর হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন বলেও জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব বিদেশিদের ওমরাহর অনুমতি দেওয়া এবং পরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় পুরো দেশ লকডাউন করা হয়। এ কারণে গত মাসে এখনই হজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয় সৌদি আরব।
এর আগে করোনা পরিস্থিতির কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যেও হজের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগ্রহীদের নিবন্ধন কার্যক্রম চালায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নিবন্ধন কার্যক্রমের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল শেষ করা হয়।

সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন। কিন্তু করোনা আতঙ্কের কারণে নিবন্ধনে তেমন সাড়া না পড়ায় এবারের পূর্ব নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি।

নিবন্ধন সার্ভার সূত্রমতে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৪২ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ এবারের হজ অনুষ্টিত হবে। সে অনুযায়ী ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরুর আশা প্রকাশ করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।

Comments (0)
Add Comment