শান্তর ব্যাটে রেকর্ডের বন্যা!

টেস্ট ক্রিকেটে জোড়া সেঞ্চুরি এমনিতেই বিরল কীর্তি। সেখানে এক ক্রিকেটারের একই ফরম্যাটে দ্বিতীয়বার সেই কীর্তি গড়া- সেটি তো রীতিমতো ঐতিহাসিকই। আজ শেষ হওয়া গল টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্ত যা করলেন, তা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

প্রথম ইনিংসে ২৭৯ বলে ১৪৮ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯৯ বলে হার না মানা ১২৫ রান- শান্তর ব্যাট যেন গলে কথা বলেছে দুই ইনিংসজুড়েই। একমাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টি বাদ দিলে পুরো ম্যাচজুড়েই ছায়া ফেলেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। দুই ইনিংসে মোট ২৭৩ রান করে ভেঙে দিয়েছেন একাধিক রেকর্ড। এক টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে এটি বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান, যা আগে ছিল মুশফিকুর রহিমের দখলে (২০০ রান, গল, ২০১৩)।

 

এই নিয়ে টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির তালিকায় দ্বিতীয়বার নাম লেখালেন শান্ত। এর আগে ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে করেছিলেন জোড়া শতক। এবার করলেন শ্রীলঙ্কার মাটিতে, প্রতিপক্ষও শক্তিশালী। বাংলাদেশের ইতিহাসে জোড়া সেঞ্চুরির ঘটনা এর আগে ঘটেছিল কেবল দুইবার-একবার মুমিনুল হকের ব্যাটে, একবার শান্তরই ব্যাটে। এবার শান্ত নিজের রেকর্ড নিজেই ছাপিয়ে গড়লেন নতুন উচ্চতা।

শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের পরিসংখ্যানে শান্তর নাম এখন জ্বলজ্বল করছে। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র ১৫ জন ব্যাটসম্যান রয়েছেন, যারা একাধিকবার জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন গাভাস্কার, পন্টিং, ওয়ার্নারের মতো কিংবদন্তিরা। শান্ত সেই তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি।

অধিনায়ক হিসেবে বিদেশের মাটিতে জোড়া সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটারও মাত্র আটজন। সেখানেও শান্তের জায়গা নিশ্চিত হলো। বাংলাদেশি কোনো অধিনায়ক হিসেবে এমন কীর্তি এবারই প্রথম। একই সঙ্গে অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে চারটি শতকে পৌঁছে ছুঁয়েছেন সাকিব আল হাসানকে। আর টেস্টে মোট সাতটি সেঞ্চুরি করে পেছনে ফেলেছেন মোহাম্মদ আশরাফুলকে (৬টি)। এখন তার সামনে তামিম, মুশফিক ও মুমিনুল-যারা যথাক্রমে ১০, ১২ ও ১৩ শতক করে রেখেছেন।

গল টেস্টে ফল না এলেও শান্তর পারফরম্যান্স আলো ছড়িয়েছে। ম্যাচ শেষে দুই দল যখন করমর্দন করে ড্র মেনে নেয়, তখন শান্তর মুখে ছিল আত্মবিশ্বাসী হাসি!